Header Ads

রেসলিংয়ের শক্তিশালী সেই রাজারা (পর্ব ২)

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী দারুণ জনপ্রিয় একটি ইভেন্ট রেসলিংমোটা মোটা মানুষ আর তাদের শক্তি দেখার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। একসময় রেসলিং শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় ছিল তবে এখন এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় বিনোদন। সরাসরি রিংয়ে দেখা ছাড়াও বিশ্বব্যাপী মানুষ টিভিতে এই খেলা দেখে থাকে। রেসলিং শুরু হলে টিভি সেটের সামনে কিশোর, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সবাই ভিড় করে এবং রুদ্ধশ্বাস ভাবে খেলা দেখতে থাকেরেসলিংয়ের মহা তারকাদের সবাইকে আমরা প্রায় সবাই চিনিএকেক জনের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন প্রিয় রেসলার তারা তাদের প্রিয় রেসলারের খেলা ও তাদের জয় দেখে আনন্দ পায়

গত পর্বে আমরা কয়েকজন বিখ্যাত রেসলার সম্পর্কে জেনে ছিলাম। আসুন আজ আরও কয়েকজন রেসলারের সম্পর্কে জানি।

বাতিস্তা : 


বডি বিল্ডার ও রেসলিং এর অন্যতম জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি হচ্ছেন বাতিস্তা। তার আসল নাম ডেভিড মিচেল বাতিস্তা জুনিয়র রিং এ তিনি 'বাতিস্তা' নামে পরিচিত। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৮ জানুয়ারি আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জন্ম গ্রহণ করেন। WWF এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এই আমেরিকান রেসলার চারবার জিতেছেন বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা। আর দুইবার পেয়েছেন WWE চ্যাম্পিয়নশিপের সেরার খেতাব। 

ফুট ইঞ্চি উচ্চতা আর ১৩০ কেজি ওজনের এই রেসলার ২০০৫ সালে ৩৬ বছর বয়সেও 'রয়েল রাম্বল ম্যাচ' জিতে আলোড়ন তুলেছিলেন রেসলিং বিশ্বে। বাতিস্তার পিতার নাম ডেভিড মিচেল বাতিস্তা, যিনি ছিলেন ফিলিপাইনের নাগরিক এবং তার মাতা ডোনা রায় বাতিস্তা ছিলেন গ্রিসের নাগরিক। শৈশবে তার পিতা-মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে তিনি ফিলিপাইনে দাদার বাড়িতে থাকতেন। শৈশব থেকেই তিনি খুবই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। শৈশবে তিনি তার চোখের সামনে ৩ জন ব্যক্তিকে খুন হতে দেখেন। ১৩ বছর বয়েসে তিনি অটোমোবাইলের দোকানে কাজ করতেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রেসলিং জগতে পদার্পণ করেন। তারা শিক্ষা গুরু ছিলেন আফা এনাই ও মাররেসি ক্রাম্প। 

বাতিস্তা ১৯৯০ সালে গ্যালেন্ডা নামক এক মহিলাকে বিবাহ করেন। তার গর্ভে ক্যাইলানি ও এথেনা নামক দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর বাতিস্তা গ্যালেন্ডাকে ত্যাগ করেন এবং ১৯৯৮ সালের ১৩ অক্টোবর এনজেইকে বিবাহ করেন। ২০০৬ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বাতিস্তা বিভিন্ন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের জন্য পোজ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি টিভিতে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন।

রান্ডি অর্টন : 


তিনি আমেরিকার একজন পেশাদার কুস্তিগির ও অভিনেতা। তার আসল নাম রেনডাল কেইথ রান্ডি অর্টন। ১৯৮০ সালের ১ এপ্রিল তিনি নোজভ্যালিতে জন্মগ্রহণ করেন। ফুট ইঞ্চি লম্বা ১০৭ কেজি ওজনের এই রেসলারের রেসলিং জগতে অভিষেক ২০০০ সালের ১৮ মার্চ। অর্টন ছিলেন তৃতীয় প্রজন্মের রেসলার। তার দাদা বব অর্টান, বাবকাউবয় বব অর্টান এবং তার চাচা ব্যারিও ছিলেন প্রফেশনাল রেসলার। অর্টন মোট ১১টি রেসলিংয়ের শিরোপা জয় করেছেন। তিনি ৯ বার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ানশীপ, ৩ বার ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ানশীপ এবং ৬ বার WWE চ্যাম্পিয়ানশীপ জয় করেন। 

অর্টনের মাতার নাম ছিল এলায়েন। বিকি ও নাথান নামে তার ছোট দুটি ভাই-বোন ছিল। ১৯৯৮ সালে তিনি হাজেলউড সেট্রাল হাইস্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন সমাপ্ত করেন। ২০০৫ সালের নভেম্বরে অর্টন তার গার্লফ্রেন্ড সামান্থা স্পেনোর সাথে তার বাগদানের কথা ঘোষণা করেন এবং ২০০৭ সালে ২১ সেপ্টেম্বর তারা বিবাহ করেন। ২০০৮ সালের ১২ জুলাই তাদের প্রথম সন্তান এলান্না ম্যারিও অর্টন এর জন্ম হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নৌসেনাদের জন্য রান্ডি অর্টনের বাম বাহুতে একটি ট্যাটু অংকিত ছিল, যাতে লেখা ছিল USMC। পরে অবশ্য এটি মুছে ফেলা হয়।

ট্রিপল এইচ : 


হাতে বিশালাকার লোহার একটি হাতুড়ি অথবা লোহার একটি মোটা চেইন দিয়ে প্রতিপক্ষকে  আঘাত করেন ট্রিপল এইচ। আর কারণে সবার কাছে তিনি ভয়ঙ্কর খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত। তার আসল নাম পল মাইকেল লেভক্স। তার আরও একটি নাম আছে আর সেটি হচ্ছে হন্টার হেরাস্ট হেলমাসলে। এই নামটির শব্দ তিনটির প্রথম শব্দ H থাকার কারণে তাকে ট্রিপল এইচ বলা হয়। ফুট ইঞ্চি লম্বা এই খেলোয়াড়ের ওজন ১১৬ কেজি। ট্রিপল এইচ এর জন্ম ২৭ জুলাই ১৯৬৯ সালে নিউ হ্যামশায়ারে। ১৯৯২ সালের ২৪ মার্চ তিনি রেসলিং জগতে খেলুড়ে জীবন শুরু করেন। ট্রিপল এইচ WWE/F তে এ পর্যন্ত ২৩টি চ্যাম্পিয়ানশীপ জয় করেছেন। তার মধ্যে ১৩ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশীপ, ৮ বার WWE/F চ্যাম্পিয়ানশীপ এবং ৫ বার ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ানশীপ জয় করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ১৯৮৭ সালে গ্রাজুয়েশন অর্জন করেন। ১৪ বছর বয়স থেকে তিনি বডি বিল্ডারে নিয়োজিত ছিলেন। ট্রিপল এইচ এর স্ত্রীর নাম স্টেফিনা ম্যাকমোহন। ২০০০ সালে তিনি ম্যাকমোহনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেন এবং ২০০৩ সালের ২৫ অক্টোবর তাকে বিবাহ করেন। তাদের রয়েছে ৩টি কন্যা সন্তান। ট্রিপল এইচ বিভিন্ন টিভি শো এবং চলচ্চিত্রে অংশ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে প্যাসিফিক ব্লু, দ্যা ড্র ক্যারি শো, ইনসাইড আউট ইত্যাদি।

উমাগা : 


রেসলারদের মধ্যে ভয়ঙ্কর ও ভীষণ রাগী একজন খেলোয়াড় ছিলেন উমাগা। প্রতিপক্ষকে জাপটে ধরাই তার কাজ। তিনি এমন ভাবে প্রতিপক্ষকে  মারতেন যাতে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের কোনও কিছু করার থাকতো না। উমাগার আসল নাম এডওয়ার্ড স্মিথ ফাতু। তার জন্ম ১৯৭৩ সালের মার্চ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোতে। ফুট ইঞ্চি লম্বা ১৬০ কেজি ওজনের এই রেসলার ১৯৯৫ সাল থেকে রেসলিং খেলা শুরু করেছিলেন। প্রাথমিক অবস্থায় তিনি আনোই রেসলিং ফ্যামিলির সদস্য ছিলেন। তিনি যখন ২০০০২ সালে প্রথমে WWE তে যোগদান করেন তখন তিনি জামাল নামে পরিচিত ছিলেন। পরে ২০০৫ সালে তিনি উমাগা নামে WWE তে পুনরায় যোগদান করেন। 

উমাগার মাতার নাম ছিল ভেরা। যিনি ২৭ এপ্রিল ২০০৮ তারিখ সাত বছর ক্যানসারের সাথে লড়াই করে মারা যান। উমাগা ছিলেন তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তার অপর দুই ভাই ছিলেন সাম ও সোলোফা। তারাও রেসলার ছিলেন। এই বরেণ্য রেসলার আমেরিকার টেক্সাসে ৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখ হার্ট এটাকে আক্রান্ত হন এবং সন্ধ্যা ৭ টায় হাসপাতালে মৃত্যূবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৬ বছর।


এরকম আরও পড়ুন:
রেসলিংয়ের শক্তিশালী সেই রাজারা (পর্ব ১)
রেসলিংয়ের শক্তিশালী সেই রাজারা (পর্ব ৩)

1 টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.