রেসলিংয়ের শক্তিশালী সেই রাজারা (পর্ব ৩)
সব বয়সী মানুষের কাছে রেসলিং একটি জনপ্রিয় ইভেন্ট। সরাসরি বা
টিভি পর্দায় যেখানেই হোক না কেন রেসলিং মানুষকে আকর্ষণ করে থাকে। মোটা মোটা ও
শক্তিশালী মানুষদের লড়াই মানুষেরা অতি আগ্রহের সাথে দেখে থাকে। যারা নিয়মিত রেসলিং
দেখে
থাকেন তাদের আছে আবার প্রিয় কয়েকজন রেসলার। তারা তাদের প্রিয় রেসলারের খেলা দেখে
আনন্দ পান। তাদের বিজয়ে হন খুশি আবার তাদের পরাজয়ে হন ব্যথিত। বিশ্বব্যাপী
জনপ্রিয় এইসব রেসলারদের সম্পর্কে জানতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে তাদের
সংক্ষিপ্ত পরিচয়। ইতোমধ্যে ১ম ও ২য় পর্বে কয়েক জন জনপ্রিয় রেসলারের পরিচয় প্রদান
করা হয়েছে। আজ পড়ুন ৩য় পর্ব।
দর্শকদের কাছে জন সিনা একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় রেসলার। বিশেষ করে ছোট ছেলে-মেয়েরা তাকে বেশী পছন্দ করে থাকে। জন সিনার আসল নাম জন ফেলেক্স এন্থোনি
জন সিনা:
দর্শকদের কাছে জন সিনা একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় রেসলার। বিশেষ করে ছোট ছেলে-মেয়েরা তাকে বেশী পছন্দ করে থাকে। জন সিনার আসল নাম জন ফেলেক্স এন্থোনি
সিনা। ৬ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা এই রেসলারের ওজন ১১০ কেজি। জন সিনা ১৯৭৭
সালের ২৩ এপ্রিল পশ্চিম নিওবেরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে আমেরিকার
ফ্লোরিডা অঙ্গ রাজ্যে বসবাস করেন। জনপ্রিয় এই রেসলার রেসলিং জগতে পা রাখেন ২০০০ সালে। WWE এর রেসলিং জগতে
তিনি এ পর্যন্ত ১৯টি শিরোপা জয় করেছেন। যার মধ্যে আছে ১০ বার WWE চ্যাম্পিয়ানশীপ ও ২ বার ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট
চ্যাম্পিয়ানশীপ। এছাড়া তিনি জয় করেছেন ৩ বার WWE United States Championship, ৪ বার ওয়ার্ল্ড ট্যাগ
টিম
চ্যাম্পিয়ানশীপ এবং ১ বার রয়েল রেম্বো।
জন সিনার পিতার নাম জন সিনা সিনিয়র এবং মাতার নাম ক্যারোল। পাঁচ
ভাইয়ের মধ্যে জন সিনা দ্বিতীয় ছোট। তার অপর ভাইদের নাম ড্যান,
ম্যাট, স্টিভ ও সেইন। জন সিনা শিক্ষা জীবনে তার গ্রাজুয়েশন সমাপ্ত করেন কুশিং
একাডেমী থেকে। কলেজে পড়া কালে তিনি সেখানের ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন। তার জার্সি
নং ছিল ৫৪। ১৯৯৮ সালে তিনি Exercise Physiology বিষয়ের উপর ডিগ্রী অর্জন।
জন সিনা লেখার ক্ষেত্রে বাম হাত ব্যবহার করে থাকেন। তিনি জাপানী এনিমেশনের বড় ভক্ত। তার প্রিয় এনিমেশনের নাম Fist of the North Star. এছাড়া জন সিনা গেমস খেলতে পছন্দ করেন, তার প্রিয় গেমের নাম Command & Conquer. জন সিনার মেয়ে বন্ধুর নাম এলিজাবেথ হোবারদিয়ো, তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ২০০৯ সালের ১১ জুলাই।
জন সিনা লেখার ক্ষেত্রে বাম হাত ব্যবহার করে থাকেন। তিনি জাপানী এনিমেশনের বড় ভক্ত। তার প্রিয় এনিমেশনের নাম Fist of the North Star. এছাড়া জন সিনা গেমস খেলতে পছন্দ করেন, তার প্রিয় গেমের নাম Command & Conquer. জন সিনার মেয়ে বন্ধুর নাম এলিজাবেথ হোবারদিয়ো, তারা উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ২০০৯ সালের ১১ জুলাই।
রেসলারের পাশাপাশি জন সিনা এখন একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। ২০০৬
সালে দ্যা মেরিন সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি এপর্যন্ত
বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার বিখ্যাত সিনেমা গুলোর মধ্যে রয়েছে Ready
to Rumble,
The Marine,
12 Rounds,
Legendary,
The Reunion ইত্যাদি। জন সিনা টিভি জগতেও বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ
করেছেন। তার আরও একটি পরিচয় রয়েছে, আর সেটি হচ্ছে, জন সিনা একজন ভাল সংগীত
শিল্পীও। তার প্রথম সংগীত এলবামের নাম You Can't See
Me.
স্টোন কোল্ড স্টিভ অস্টিন:
নাড়ু মাথার খেলোয়াড় স্টিভঅস্টিন। তার রাগটা একটু বেশী অন্যদের থেকে । খেলার সময় তিনি ছিলেন ভয়ঙ্কর। তবে অবসরে গেছেন অনেক আগেই। সত্যি দর্শক মাতানো বিপজ্জনক খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। কোনও বিপক্ষকেই ভয় করতেন না তিনি। স্টিভ অস্টিনের আসল নাম স্টিভেন জেমস এন্ডারসন। তিনি স্টিভেন জেমস উইলিয়ামস নামেও পরিচিত। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা এই রেসলারের ওজন ১১৪ কেজি। অস্টিন ১৯৬৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৮৯ সালের ১১ মে তারিখে অস্টিন তার রেসলিং জীবন শুরু করেন। তার রেসলিংয়ের শিক্ষাগুরু ছিল ক্রিস এডামস।
তার রেসলিং ক্যারিয়ারে তিনি মোট ১৯টি শিরোপা জয় করেছেন। যার মধ্যে আছে ৬ বার WWF Championship, ৫ বার Triple Crown Championship. ১৯৯৬ সালে তিনি কিং অব দা রিং, ১৯৯৭, ১৯৯৮ ও ২০০১ সালে রয়্যাল রেম্বো শিরোপা জয় করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ২০০৩ সালের ৩০ মার্চ তারিখে রেসলিং থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
টেক্সাসে
বসবাস কালে তার বাবার মৃত্যু হলে তার মা বেভারলি কেন উইলিয়ামসকে বিবাহ করেন। অস্টিন
Wharton County Junior College থেকে ফুটবলের উপর স্কলারশীপ অর্জন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি
নর্থ টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে পরিপূর্ণ স্কলারশীপ অর্জন করেন। ১৯৯২ সালের ১৮
ডিসেম্বর অস্টিন জেনি ক্লার্ককে বিবাহ করেন।
জেনি ছিল তার বন্ধু। জেনির গর্ভে ২টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, যাদের নাম স্টিফেনি (জন্ম ১৯৯২) ও ক্যাসিডি (জন্ম ১৯৯৬)। এছাড়া তাদের জ্যাডি নামে একজন পালিত কন্যাও আছে। ১৯৯৯ সালের ১০ মে অস্টিন-ক্লার্কের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০০০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অস্টিন ডেবরা মার্শালকে বিবাহ করেন। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে অস্টিন তার পুরাতন নাম স্টিভেন জেমস উইলিয়ামস পরিবর্তন করে স্টন কোল্ড স্টিভ অস্টিন রাখেন।
জেনি ছিল তার বন্ধু। জেনির গর্ভে ২টি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, যাদের নাম স্টিফেনি (জন্ম ১৯৯২) ও ক্যাসিডি (জন্ম ১৯৯৬)। এছাড়া তাদের জ্যাডি নামে একজন পালিত কন্যাও আছে। ১৯৯৯ সালের ১০ মে অস্টিন-ক্লার্কের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০০০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অস্টিন ডেবরা মার্শালকে বিবাহ করেন। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে অস্টিন তার পুরাতন নাম স্টিভেন জেমস উইলিয়ামস পরিবর্তন করে স্টন কোল্ড স্টিভ অস্টিন রাখেন।
অস্টিন
রেসলারের পাশাপাশি একজন ভাল অভিনেতা। ১৯৯৯ সালে Beyond the Mat সিনেমার
মাধ্যমে সিনেমা জগতে পদার্পণ করেন তিনি। এ পর্যন্ত তার অভিনীত সিনেমা গুলোর মধ্যে
রয়েছে The Longest Yard, The Condemned, Damage, The Expendables, Hunt
to Kill,
Tactical Force ইত্যাদি। তিনি টেলিভিশনের অনেক সিরিজেও অভিনয় করেছেন।
দি গ্রেট ক্যালি:
যাকে দানব বললেও ভুল হবে না। উচ্চতা ও শরীর স্বাস্থ্যের দিক থেকে গ্রেট ক্যালি আসলেই একজন দৈত্য-মানব। ৭ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা ও ১৫৭ কেজি ওজনের বিরাট শরীরের অধিকারী গ্রেট ক্যালি। গ্রেট ক্যালির আসল নাম দিলীপ শিং রানা। ১৯৭২ সালের ২৭ আগস্ট ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধিরানায় জন্ম গ্রহণ করেন গ্রেট ক্যালি। তিনি বর্তমানে বসবাস করেন জর্জিয়ার আটলান্টায়। গ্রেট ক্যালি ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর WWE’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে রেসলিং জগতে প্রবেশ করেন। এর আগে তিনি ১৯৯৫ ও ৯৬ সালে ভারতের মি, ইন্ডিয়া শিরোপা জয় করেন। রেসলিংয়ে প্রবেশ করার আগে তিনি ভারতের পাঞ্চাব রাজ্যের পুলিশ অফিসার ছিলেন। WWE তে যোগ দান করে তিনি এ পর্যন্ত একবার World Heavyweight Championship ও একবার Slammy Award জয় করেছেন।
গ্রেট
ক্যালির পিতার নাম জাওলা রাম ও মাতার নাম তান্দি দেবী। তিনি সাত ভাই-বোনের মধ্যে
একজন। তাদের পূর্বপুরুষ থেকে সবাই ছিল এরকম লম্বা দেহের অধিকারী। তার দাদা ছিল ৬
ফুট ৬ ইঞ্চ লম্বা। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ক্যালি হারমিদারকে বিবাহ করেন। তিনি
হিন্দুদের দেবতা কেলির নাম অনুসারে তার নাম দি গ্রেট ক্যালি রাখেন। ক্যালি নিজেকে
একজন নিরামিষ ভোজী হিসেবে পরিচয় দেন তবে তিনি আবার মুরগীর মাংস খান। কারণ, এটি তার
খুব প্রিয়। রেসলিং এর পাশাপাশি গ্রেট ক্যালি একজন অভিনেতা। তিনি এ পর্যন্ত ৩টি
হলিউডের সিনেমা ও ২টি বলিউডের সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
মার্ক হেনরি:
আমেরিকার প্রফেশনাল রেসলারদের মধ্যে মার্ক হেনরি অন্যতম। তার বিরাট দেহ অন্যান্য রেসলারদের জন্য আতংক। মার্ক হেনরির আসল নাম মার্ক জেরল্ড হেনরি। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা এই রেসলারের ওজন ১৮৭ কেজি। মার্ক হেনরি জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৭১ সালের ১২ জুন আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সিলসবিতে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাস করেন। হেনরির বয়স যখন ১২ বছর তখন তার বাবা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। হেনরির বড় একজন ভাই আছে, যার নাম প্যাট। প্রাথমিক জীবনে হেনরি আমেরিকান হাইস্কুল ফুটবলে খেলা করতেন। হেনরির স্ত্রীর নাম জানা এবং তার পুত্রের নাম জ্যাকোব।
মার্ক
হেনরির রেসলিং ক্যারিয়ার সাফল্য মণ্ডিত। তিনি এ পর্যন্ত জয় করেছেন ওয়ার্ল্ড
হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ানশীপ, 2002 Arnold Strongman Classic, WWF
European Championship, world championship, ECW World Championship, World
Heavyweight Championship. মার্ক হেনরি ১৯৯২ সালের স্পেন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ
গ্রহণ করেন এবং সুপার হেভিওয়েট বিভাগে ১০ম স্থান অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালের প্যান
আমেরিকান গেমসে সুপার হেভিওয়েট বিভাগে সিলভার মেডেল জয় করেন। ১৯৯৬ সালে হেনরি WWE তে যোগদান করেন মাঝে বিরতি
দেওয়ার পর তিনি পুনরায় WWE
তে
ফিরে আসেন এবং অদ্যাবধি সেখানে আছেন।
ব্রেট হার্ট:
তার বাবাও ছিলেন রেসলার। আর বাবার সঙ্গে ১৯৭৬ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে WWF এ অভিষেক হয় ব্রেট হার্টের। তারপর ২০০০ সালের আগে অবসরে যাওয়া পর্যন্ত নিজের সুনামটা ঠিকই ধরে রেখেছিলেন ব্রেট হার্ট। অসাধারণ নৈপুণ্য এবং খ্যাতি অর্জনের জন্য ‘ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ হল অব ফেম' এ আছে তার নাম। জনপ্রিয় এই রেসলার সাতবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, পাঁচবার WWF ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এ ছাড়াও আছে তার অনন্য কিছু অর্জন।
এরকম আরও পড়ুন:
সুমন ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এইমাত্র আপনার রেসলিংয়ের শক্তিশালী সেই রাজারা পর্ব ১-2-3 পড়লাম এবং অনেক তথ্য জানতে পারলাম।
উত্তরমুছুনআনেক ভাললেগেছে ।