সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য কোরাল
আমাদের এই পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রতি নিয়ত কত কিছু না ঘটছে। তবে এই
পৃথিবী পৃষ্ঠের মতো আরও একটি জায়গা আছে যেখানেও প্রতি নিয়ত ঘটছে নানান সব ঘটনা। পৃথিবী
পৃষ্ঠ যেমন বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত ঠিক তেমনি ভাবে এই জায়গাটিও একটি বিশাল এলাকা
নিয়ে গঠিত। আপনি কি বুঝতে পেরেছেন এই জায়গাটি কোথায়? এই এলাকাটি হচ্ছে সমুদ্রের
তলা। সাগর-মহাসাগরের তলার বিশাল এই এলাকাগুলো আলাদা এক একটি জগত।
সেখানে মানুষ বসবাস করে না তবে সেখানেও আছে বসবাসের জন্য বিচিত্র সব প্রাণী ও জীব। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কোরাল। সমুদ্রের তলার সৌন্দর্যের কথা আসলে সবার আগে আসে কোরালের কথা। সাগরের তলায় গেলে সবাইকে যে জিনিসটি মুগ্ধ করে সেটি হচ্ছে এই কোরাল। বর্ণিল এই জীবগুলো সাগর রত্ন নামে পরিচিত।
সেখানে মানুষ বসবাস করে না তবে সেখানেও আছে বসবাসের জন্য বিচিত্র সব প্রাণী ও জীব। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কোরাল। সমুদ্রের তলার সৌন্দর্যের কথা আসলে সবার আগে আসে কোরালের কথা। সাগরের তলায় গেলে সবাইকে যে জিনিসটি মুগ্ধ করে সেটি হচ্ছে এই কোরাল। বর্ণিল এই জীবগুলো সাগর রত্ন নামে পরিচিত।
কোরাল এক ধরনের
অমেরুদণ্ডী
প্রাণী। এরা সিলন্টারাটা পূর্ব
ভুক্ত জীব। বর্ণিল এ প্রাণীগুলো
সমাজবদ্ধ ভাবে বাস করে। সারাজীবন এরা
একসঙ্গে বসবাস করে আবার মরণেও
তারা থাকে একসঙ্গে। মৃত কোরালও এক ধরনের পরিবর্তনে অংশ
নেয়। মৃত কোরালের দেহ স্তূপাকারে জমা হয়ে নানা
আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। উদাহরণ
হিসেবে কোরাল রিফ, কোরাল ব্যাঙ্কের নাম উল্লেখ করার মতো। তবে
এদের মূল উপাদান অভিন্ন। এরা কার্বোনেট অব লাইম নিয়ে তৈরি। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর অংশ, শৈবালও দেখতে পাওয়া যায়। কোরাল রিফ অথবা কোরাল ব্যাঙ্ক গঠন
নির্ভর করে সাগরের
পরিবেশের ওপর। বিশেষ করে
তাপমাত্রা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবের
উপস্থিতির
মাত্রার ওপর নির্ভরশীল।
কোরালরিফ মৃত কোরালের একটি আকৃতি। পাথুরে কোরাল দিয়ে কোরাল রিফ তৈরি হয়। কোরাল রিফ সাধারণত গঠিত হয় ট্রপিক্যাল সাগরে। ট্রপিক্যাল সাগরের অগভীর অঞ্চলে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। ২২ সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা কোরাল রিফ গঠনে আদর্শ। আর অগভীর অঞ্চলে সাধারণত এমন তাপমাত্রা বজায় থাকে। এই কারণে সাধারণত ১১ মিটার হতে ৪০ মিটার গভীর সাগর অঞ্চলে কোরাল রিফের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কোরাল রিফ সাধারণত উপরের দিকে বৃদ্ধি পায়।
কোরাল রিফ:
কোরালরিফ মৃত কোরালের একটি আকৃতি। পাথুরে কোরাল দিয়ে কোরাল রিফ তৈরি হয়। কোরাল রিফ সাধারণত গঠিত হয় ট্রপিক্যাল সাগরে। ট্রপিক্যাল সাগরের অগভীর অঞ্চলে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। ২২ সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা কোরাল রিফ গঠনে আদর্শ। আর অগভীর অঞ্চলে সাধারণত এমন তাপমাত্রা বজায় থাকে। এই কারণে সাধারণত ১১ মিটার হতে ৪০ মিটার গভীর সাগর অঞ্চলে কোরাল রিফের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কোরাল রিফ সাধারণত উপরের দিকে বৃদ্ধি পায়।
কোরাল ব্যাঙ্ক:
সাগরের গভীরে আরেক ধরনের কোরাল জন্মে। যেটিকে বলা হয় কোরাল ব্যাঙ্ক। সাগরের ৬০ মিটার হতে ২০০ মিটার গভীর অঞ্চলে এরা বাস করে। ৪ ডিগ্রি থেকে ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এদের জন্য খুবই উপযোগী। এ ধরনের কোরালের মৃতদেহ রিফ না গঠন করে ব্যাঙ্ক গঠন করে। ব্যাঙ্কগুলো উচ্চতায় খুব একটা বাড়ে না বরং এদের বৃদ্ধি দৈর্ঘ্য বরাবর অনেক বেশি হয়। নরওয়ে থেকে কেপ ভার্দের কূল বরাবর ইস্টার্ন আটলান্টিক শেলফ এজ এদের উৎপত্তিস্থল। এছাড়া নাইজার নদীর বদ্বীপ অঞ্চল, মেক্সিকো উপসাগর, নিউজিল্যান্ডে ক্যাম্পবেল মালভূমি ও শাথান রাইজ এলাকায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও জাপানের কাছে উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরেও এ ধরনের কোরাল পাওয়া যায়।
বর্তমানে সাগরগুলোতে আরও এক ধরনের কোরাল জন্মে। এরা আরও গভীর আর শীতল পরিবেশের জন্য উপযোগী। এন্টার্কটিকা, পাতাগোনিয়া, ফকল্যান্ড দ্বীপে এদের
দেখা যায়। যেখানের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সে.
থেকে ৬ ডিগ্রি সে. এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। তবে একটি
বিষয় জেনে রাখা দরকার যে, অধিকাংশ কোরালই রিফ গঠন করে।
ট্রপিক্যাল সাগরে কোরাল রিফ গঠিত হয়। এ ধরনের সাগরে তাপমাত্রা রিফ গঠনকারী কোরালের জন্ম ও দৈহিক বৃদ্ধির জন্য উপযোগী। সাগরের পানিতে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা থাকে বলে প্রচুর ফাইটোপ্লাঙ্কটন জন্মে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ। ফাইটোপ্লাঙ্কটন খেয়ে জুপ্লাঙ্কটন নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র প্রাণী বেঁচে থাকে। কোরালের প্রধান খাদ্য জুপ্লাঙ্কটন। যথাযথ পরিমাণ জুপ্লাঙ্কটন থাকে বলে গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠন সম্ভব হয়েছে। গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠনে সাগরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। কোরাল রিফ সাধারণত বেশি গভীরতায় গঠিত হয় না।
এর মূলে থাকে একটা বিশেষ সম্পর্ক। সাগরের গভীরতা বৃদ্ধি পেলে আলোর স্থায়িত্ব কমে যায়। সেজন্য কোরাল রিফ বেশী গভীরতায় তৈরি হয় না। যেমন বলা যায় মাকেরিয়া আইল্যান্ডের কথা। সাধারণত সাগরে মার্চ মাসে ২০ মিটার গভীরতায় আলো থাকে ১১ ঘণ্টা, ৩০ মিটারে ৫ ঘণ্টা, ৪০ মিটারে মাত্র ১৫ মিনিট। অবশ্য আলোরে এই উপস্থিতি তার অক্ষাংশের ওপর নির্ভরশীল থাকে।
রিফ গঠনে সাগরে ভূ-প্রাকৃতিক গঠন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি কথা বলতে গেলে কোরাল রিফ তৈরির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এখনো মানুষের অজানা। এর গঠন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। পৃথিবীর বহিরাঞ্চলের গঠন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। কোথাও চাপের আধিক্যে পূর্বাঞ্চল তৈরি হচ্ছে, আবার কোনও অঞ্চল সাগরে ডুবে যাচ্ছে। বর্তমানে সাগরের তলায় সাধারণত ৩ ধরনের রিফ দেখা যায়। যথা: বেলা শৈল, প্রবাল প্রাচীর ও এটল।
আমরা অনেকেই জানি সাগর তলেও অনেক সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। বহু-অভ্যন্তরস্থ চাপের কারণে অনেক সময় এরা পানি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। আগ্নেয়গিরি যখন পানি ফুড়ে বের হতে থাতে তখন কোরাল বেলা শৈল গঠিত হয়। যে সময়ে আগ্নেয়গিরি মারা যায় এবং সাগরে ডুবে যেতে শুরু করে তখন প্রবাল প্রাচীর গঠিত হয়। আগ্নেয়গিরি সম্পূর্ণ ডুবে গেলে এটল তৈরি হয়।
রিফ গঠনের কৌশল:
ট্রপিক্যাল সাগরে কোরাল রিফ গঠিত হয়। এ ধরনের সাগরে তাপমাত্রা রিফ গঠনকারী কোরালের জন্ম ও দৈহিক বৃদ্ধির জন্য উপযোগী। সাগরের পানিতে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা থাকে বলে প্রচুর ফাইটোপ্লাঙ্কটন জন্মে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ। ফাইটোপ্লাঙ্কটন খেয়ে জুপ্লাঙ্কটন নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র প্রাণী বেঁচে থাকে। কোরালের প্রধান খাদ্য জুপ্লাঙ্কটন। যথাযথ পরিমাণ জুপ্লাঙ্কটন থাকে বলে গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠন সম্ভব হয়েছে। গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠনে সাগরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। কোরাল রিফ সাধারণত বেশি গভীরতায় গঠিত হয় না।
এর মূলে থাকে একটা বিশেষ সম্পর্ক। সাগরের গভীরতা বৃদ্ধি পেলে আলোর স্থায়িত্ব কমে যায়। সেজন্য কোরাল রিফ বেশী গভীরতায় তৈরি হয় না। যেমন বলা যায় মাকেরিয়া আইল্যান্ডের কথা। সাধারণত সাগরে মার্চ মাসে ২০ মিটার গভীরতায় আলো থাকে ১১ ঘণ্টা, ৩০ মিটারে ৫ ঘণ্টা, ৪০ মিটারে মাত্র ১৫ মিনিট। অবশ্য আলোরে এই উপস্থিতি তার অক্ষাংশের ওপর নির্ভরশীল থাকে।
রিফ গঠনের প্রক্রিয়া:
রিফ গঠনে সাগরে ভূ-প্রাকৃতিক গঠন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি কথা বলতে গেলে কোরাল রিফ তৈরির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এখনো মানুষের অজানা। এর গঠন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। পৃথিবীর বহিরাঞ্চলের গঠন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। কোথাও চাপের আধিক্যে পূর্বাঞ্চল তৈরি হচ্ছে, আবার কোনও অঞ্চল সাগরে ডুবে যাচ্ছে। বর্তমানে সাগরের তলায় সাধারণত ৩ ধরনের রিফ দেখা যায়। যথা: বেলা শৈল, প্রবাল প্রাচীর ও এটল।
আমরা অনেকেই জানি সাগর তলেও অনেক সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। বহু-অভ্যন্তরস্থ চাপের কারণে অনেক সময় এরা পানি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। আগ্নেয়গিরি যখন পানি ফুড়ে বের হতে থাতে তখন কোরাল বেলা শৈল গঠিত হয়। যে সময়ে আগ্নেয়গিরি মারা যায় এবং সাগরে ডুবে যেতে শুরু করে তখন প্রবাল প্রাচীর গঠিত হয়। আগ্নেয়গিরি সম্পূর্ণ ডুবে গেলে এটল তৈরি হয়।
রিফের উপাদান:
রিফে বেশ
কিছু উপাদান থাকে। লাইম অব কার্বোনেট ছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম, স্ট্রনসিয়ামের মতো ধাতুও অল্প পরিমাণ থাকে রিফে। রিফে আরও থাকে ম্যাঙ্গানিজ, লোথ ইত্যাদি। তবে ইহাতে স্বল্প
পরিমাণ থাকে পিপিএম। স্থানভেদে
আরও বেশ কিছু উপাদানের হেরফের থাকে রিফে। উদাহরণ স্বরূপ, প্রশান্ত মহাসাগরের কোরালে ২.১৭ পিপিএম
ইউরেনিয়ামও পাওয়া যায়।
সাগরের সৌন্দর্যের জন্য কোরালের ভূমিকা অপরিসীম। আজকাল ধীরে ধীরে সাগরে কোরাল হ্রাস পাওয়ার কারণে সাগরের সৌন্দর্যও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। যেসকল স্থান ব্যাপক হারে কোরাল হ্রাস পাচ্ছে সেকল স্থানে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোরাল উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কোনও উপায়ে সাগরের তলদেশের কোরালকে রক্ষা করতে হবে। নতুবা সাগরের তলদেশের অপূর্ব সৌন্দর্য একদিন হারিয়ে যাবে চিরতরে। আর সেটি হবে প্রকৃতির জন্য মারাত্মক এক ক্ষতি।
সাগরের সৌন্দর্যের জন্য কোরালের ভূমিকা অপরিসীম। আজকাল ধীরে ধীরে সাগরে কোরাল হ্রাস পাওয়ার কারণে সাগরের সৌন্দর্যও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। যেসকল স্থান ব্যাপক হারে কোরাল হ্রাস পাচ্ছে সেকল স্থানে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোরাল উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কোনও উপায়ে সাগরের তলদেশের কোরালকে রক্ষা করতে হবে। নতুবা সাগরের তলদেশের অপূর্ব সৌন্দর্য একদিন হারিয়ে যাবে চিরতরে। আর সেটি হবে প্রকৃতির জন্য মারাত্মক এক ক্ষতি।
কোন মন্তব্য নেই