Header Ads

কে এই ইবনে আরাবী? পরিচয় ও কায়ী বসতির সাথে তার সম্পর্ক

ইবনে আরাবী, বর্তমানে সবার কাছে অতিপরিচিত একজন ব্যক্তি। তুরস্কের তৈরি টিভি সিরিজ দিরিলিস আর্তগ্রুল এর কল্যাণে হাজার বছর পর তিনি আবার আলোচনায় এসেছেন। যারা টিভিতে নিয়মিত আর্তগ্রুল দেখেন তাদের কাছে সাদা দাড়ি বিশিষ্ট ইবনে আরাবী একজন রহস্যময় ব্যক্তি। এই টিভি সিরিজে ইবনে আরাবীকে একজন দরবেশ বা আল্লাহ প্রেমী মানুষ হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। কিন্তু আসলে কে ছিলেন এই ইবনে আরাবী? কি তার পরিচয়? সবকিছুই জানবো আমরা আজকের এই লেখাতে।

ইবনে আরাবীর পরিচয়:

ইবনে আরাবীর আসল নাম আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে মোহাম্মদ ইবনে আরাবী আল হাতেমি। তবে তিনি শেখ আল আকবর মুহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী নামেই বেশি পরিচিত। স্পেনের মুর্সিয়া নগরীতে জন্ম নেয়া ইবনে আরাবী ছিলেন আরবের একজন বিখ্যাত সূফি, সাধক, লেখক ও দার্শনিক। ১১৬৫ খ্রিষ্টব্দের ২৬ জুলাই তিনি তৎকালিন আন্দালুসিয়া বা বর্তমান স্পেনের মুর্সিয়া নগরীতে জন্ম গ্রহণ করেন।

ইবনে আরাবী সুন্নি মুসলিম ছিলেন, কিন্তু শিয়া দ্বাদশ ইমামদের নিয়ে লিখিত তার বই গুলো শিয়াদের মধ্যে অধিক জনপ্রিয় ছিল। ইবনে আরবীর শিক্ষা দ্রুত মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর লেখাগুলি কেবল মুসলিম অভিজাতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সেগুলি অন্য ধর্মের মানুষদেরও আকর্ষন করেছিল। তার লিখিত বই গুলো ফার্সি, তুর্কি, উর্দু ও আরবিতে অনুদিত হয়ে জনপ্রিয়তার সাথে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল।

ইবনে আরাবীর শৈশব থেকে ইতিহাস ছিল অনেক রোমাঞ্চকর। তার পূর্বপুরুষরা ছিল আরব উপজাতি এবং মাতৃগোষ্ঠী ছিল আফ্রিকার বারবার উপজাতি।  তার পিতা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং তিনি নিজেও শৈশবে সৈনা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। যুবক সময়ে ইবনে আরাবী সেভিলের সরকারি কর্মচারি ছিলেন এবং তিনি মরিয়ম নামের এক সম্ভ্রান্ত মহিলাকে বিবাহ করেন।

কায়ী বসতিতে আগমন: 

১১৯৩ সালে তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য বিশ্ব ভ্রমণে বের হন। প্রথমে তিনি নিজ পিতার শহর আন্দালুসিয়া থেকে তিউনিসিয়া ভ্রমণ শেষে ১২০০ সালে তিনি আনাতোলিয়াতে এসে উপস্থিত হন। এখানে সেলজুকদের সাথে তার ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়। ১২০৬ সালে তিনি মক্কা, মদীনা ও জেরুজালেম ভ্রমণ শেষে আলেপ্পোতে এসে হাজির হন এবং এখানে তিনি মুসলিম বীর আর্তগুল ও তার বাহিনীর সাক্ষাত পান। তাদের সাথে এক বছর থাকার পর ১২০৭ সালে তিনি আবার মক্কায় ফেরত আসেন।



মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাকি জীবন তিনি আরবের আশেপাশে দেশ সমূহ ভ্রমণ করে বেড়িয়েছেন এবং মানুষদের ইসলামের দীক্ষা দিয়েছেন। ১২৪০ সালের ৮ নভেম্বর ৭৫ বছর বয়েসে এই মহিয়সী আল্লাহর দরবেশ দামেস্কে ইন্তেকাল করেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.