Header Ads

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য উন্মোচন – শয়তানের ত্রিভুজ নামে প্রতারণা

আমাদের এই পৃথিবীতে এত সব রহস্যময় বিষয়বস্তু আছে যে, এই  পৃথিবীটাকেই আপনার একটি রহস্য মনে হতে পারেতবে আপনি শুনলে অবাক হবেন যে, এই পৃথিবীতে যত রহস্য রয়েছে তার অনেক গুলোই মানুষের তৈরি করা গুজব। আর এই গুজব গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গুজব হচ্ছে রহস্যময় বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল। আমরা শুনেছি বারমুডা ট্রাইঙ্গেল এর উপর দিয়ে কোন বিমান উড়লে কিংবা এই এলাকায় কোনও জাহাজের আগমন ঘটলে সেটি এক অদৃশ্য শক্তিতে হারিয়ে যায়। কিন্তু আসলে কি তাই? আজকে আমরা অনুসন্ধান করবো সত্য মিথ্যার দোলাচলে থাকা এক  রহস্যের সত্যতা।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বহু বছর ধরে নাবিক, পর্যটক বা বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্য ঘেরা স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে এসেছেএই স্থানটি শয়তানের ত্রিভুজ নামেও পরিচিত আটলান্টিক মহাসাগরের এ বিশেষ অঞ্চলে জাহাজ ও বিমান রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়া কথা বলা হয়কোনও জাহাজ এই অঞ্চলে প্রবেশ করলে সেই জাহাজ নাকি হারিয়ে যায় আবার এই অঞ্চলের উপর দিয়ে কোনও বিমান উড়ে গেলে সেটি নাকি অদৃশ্য হয়ে যায়। এতো দিন এই বিষয়টি সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলেও। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যকে মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেনএমনকি তারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে ঘিরে পূর্বের রহস্যময় ঘটনাগুলোকে মিথ্যা ও সাজানো বলে মতামত দিয়েছেন


বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে ঘিরে রহস্যের প্রথম ধারনাটি দেন ক্রিস্টোফার কলোম্বাস। ১৪৯২ সালের ১১ই অক্টোবর, তিনি তার লগ বুকে লিখেছিলেন, নাবিকেরা এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে আলোর নাচানাচি, আকাশে কালো ধোয়া  দেখেছিল এবং জাহাজে নাবিকদের কম্পাসে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে বিশেষজ্ঞরা প্রকৃত লগবুক পরীক্ষা করে মত দিয়েছেন যে, নাবিকেরা যে আলো দেখেছিল সেটি ছিল ওই এলাকার জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত নৌকায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত আগুন ধোয়া, আর কম্পাসে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল নক্ষত্রের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে বিমান চলাচলের ট্রাকিং


১৯৫০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর ডব্লিউ. জোন্স সর্বপ্রথম এ ত্রিভুজ নিয়ে খবরের কাগজে লিখেন এর দু বছর পর ফেইট ম্যাগাজিনে জর্জ স্যান্ড একটি ছোট প্রবন্ধ লিখেন প্রবন্ধে তিনি ফ্লাইট নাইনটিন নামে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর পাঁচটি প্রশিক্ষণ বিমান নিখোঁজ হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করেন। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল বিষয়ে রহস্য ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। বিশ্বব্যাপী অনেক লেখক তাদের মনের মাধুরি মিশিয়ে বই লেখা শুরু করেন এবং এই বিষয়ে কিছু সিনেমাও তৈরি করা হয়, যার বিষয়বস্তু ও কাহিনী ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে জাহাজ চলাচলের চিত্র


বর্তমান বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, এই অঞ্চলের নামে যে প্রচারণা রয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি গুজব। মূলত লেখকদের মনের কল্পণা ও ধারনা থেকে তারা এ অঞ্চলের বিষয়ে গুজব তৈরি করেছিল। আপনি যদি আরও পরিস্কার হতে চান তবে অনলাইনে বিমান ট্রাকিং সফটওয়ার দিয়ে দেখতে পাবেন, প্রতিদিন বারমুডা ট্রাইঙ্গেল দিয়ে শত শত বিমান চলাচল করে থাকে। কিন্তু কোনও দিন কোনও বিমান হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ঠিক তেমনি এই অঞ্চল দিয়ে প্রতিদিন সমুদ্রগামী জাহাজ চলাচল করে কিন্তু কোনও জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।


মূলত বারমুডা টাইঙ্গেল বিশ্বব্যপী অতিপরিচিত এবং রহস্যময় একটি স্থান। তবে বাস্তবতার নিরিখে এই অঞ্চলে বর্তমান সময়ে কোনও প্রকার অঘটনের খবর পাওয়া যায় নি। আবার পূর্বের রচিত ঘটনাগুলোও ছিল বেশিরভাগ সন্দেহ ও কল্পণা প্রসূত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.