দুঃসাহসী মহাবীর হারকিউলিসের পরিচয়
বিশ্ব
ইতিহাসে অনেক বীর ও সাহসী যোদ্ধার কাহিনী আছে সমাদৃত। বিশ্বের প্রায় সকল জাতিতে
বীরদের আলাদা আলাদা ইতিহাস বা কাহিনী রয়েছে। যার মধ্যে কিছু কাহিনী রয়েছে সত্যি
আবার কিছু কাল্পনিক। কাল্পনিক কাহিনীর জন্য সবচেয়ে বেশী বিখ্যাত হলো গ্রিক। গ্রিকে
যে সকল বিখ্যাত কাল্পনিক কাহিনী রয়েছে হারকিউলিস তাদের মধ্যে অন্যতম। হারকিউলিস পৌরাণিক
হেরাক্লেস পুরাণ থেকে এসেছে।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে হেরাক্লেস ছিল এক গ্রিক মহাবীর। হেরাক্লেসের আরেক নামই হচ্ছে হারকিউলিস। হারকিউলিস নামের উৎপত্তি হয়েছে হেরাক্লেস থেকে হারকুলেস এবং তার থেকে হারকিউলিস। কাল্পনিক কাহিনী অনুসারে হারকিউলিসের জন্ম গ্রিসের থিবিসে। তার পিতা ছিল দেবরাজ জিউস এবং তার মাতা ছিল আক্লমিনা নামে এক মহিলা।
আক্লমিনা ছিলেন আম্ফিত্রায়ণের স্ত্রী। সেই হিসেবে আম্ফিত্রায়ণ ছিলেন হেরাক্লেসের পালক পিতা। ইফিক্লেস ছিল আল্কমেনি এবং আম্ফত্রায়ণের প্রকৃত ছেলে এবং হেরাক্লেসের ভাই। কারণ তাদের মাতা ছিল অভিন্ন কিন্তু পিতা ছিল ভিন্ন। জিউসের সন্তান হওয়ার জন্য হারকিউলিসের জীবনের শেষ পর্যন্ত হেরা তাকে কখনোই ক্ষমা করেননি। হারকিউলিস যখন শিশু ছিল তখনই হেরা তাকে হত্যা করার জন্য দুটি সাপ পাঠিয়েছিল। কিন্তু তার সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। মিনিয়দের বিরুদ্ধে অসামান্য বীরের পরিচয় দেয়ার কারণে নগরবাসী রাজকুমারী মেগারাকে হারকিউলিসের সঙ্গে বিয়ে দেন।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে হেরাক্লেস ছিল এক গ্রিক মহাবীর। হেরাক্লেসের আরেক নামই হচ্ছে হারকিউলিস। হারকিউলিস নামের উৎপত্তি হয়েছে হেরাক্লেস থেকে হারকুলেস এবং তার থেকে হারকিউলিস। কাল্পনিক কাহিনী অনুসারে হারকিউলিসের জন্ম গ্রিসের থিবিসে। তার পিতা ছিল দেবরাজ জিউস এবং তার মাতা ছিল আক্লমিনা নামে এক মহিলা।
আক্লমিনা ছিলেন আম্ফিত্রায়ণের স্ত্রী। সেই হিসেবে আম্ফিত্রায়ণ ছিলেন হেরাক্লেসের পালক পিতা। ইফিক্লেস ছিল আল্কমেনি এবং আম্ফত্রায়ণের প্রকৃত ছেলে এবং হেরাক্লেসের ভাই। কারণ তাদের মাতা ছিল অভিন্ন কিন্তু পিতা ছিল ভিন্ন। জিউসের সন্তান হওয়ার জন্য হারকিউলিসের জীবনের শেষ পর্যন্ত হেরা তাকে কখনোই ক্ষমা করেননি। হারকিউলিস যখন শিশু ছিল তখনই হেরা তাকে হত্যা করার জন্য দুটি সাপ পাঠিয়েছিল। কিন্তু তার সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। মিনিয়দের বিরুদ্ধে অসামান্য বীরের পরিচয় দেয়ার কারণে নগরবাসী রাজকুমারী মেগারাকে হারকিউলিসের সঙ্গে বিয়ে দেন।
পুরাণের
বর্ণনা মতে, গ্রিসে
নেমিয়াত নামে ভয়াবহ একটি উপত্যকা ছিল। কারণ সেখানে বিরাটকায় একটি সিংহ বসবাস করতো। সিংহটি মানুষ, পশু, নির্বিশেষে
সবার ওপরই আক্রমণ করত। সিংহটি
ছিল এতই ভয়াবহ ও হিংস্র যে তার সামনে পড়লে কোনও প্রাণীরই জীবন নিয়ে ফিরে যাওয়ার
সাধ্য ছিল না। এই সিংহের গায়ের চামড়া
এতটাই পুরু ছিল যে
ব্রোঞ্জ তীর ছুড়ে মারলে সেটি তার গায়ের চামড়ায় লেগে ছিটকে যেত। হিংস্র সিংহটি এই উপত্যকার মানুষদের বসবাসের জন্য চরম বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এলাকার
মানুষকে বাচাতে এবং তাদের শান্তি প্রদানের জন্য হারকিউলিস সিংহটি মারার
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
সিংহটি তখন মারা ছিল একবারেই দুঃসাধ্য। সবাই নিশ্চিত ছিল যে, এই সিংহ মারতে গিয়ে হারকিউলিস নিজেই মারা পড়বে। হারকিউলিস সিংহটিকে মারার জন্য ওক গাছের কাঠ দিয়ে বিশাল বড় একটা লগুর তৈরি করেন। লগুরটি এতই ভারী ছিল যে, ২০ জন শক্তিশালী মানুষও লগুরটি তুলতে ব্যর্থ হয়। হেরাক্লেস লগুরটিকে নিয়ে একাই সিংহের গুহায় ঢুকেছিলেন। ঢোকার পর সিংহটি তাকে প্রথমে আক্রমণ করে কিন্তু পরক্ষণেই হারকিউলিস লগুরটি দ্বারা সিংহটিকে আঘাত করলে সিংহটি পরাস্ত হয়। লগুরের আঘাতে সিংহটি আহত ও ক্লান্ত হয়ে পড়লে হেরাক্লেস সিংহটিকে গলা টিপে হত্যা করেন। এই দুঃসাহসিক ঘটনার পর হারকিউলিসের নামে বিভিন্ন স্থানে বীরত্ব ছড়িয়ে পড়ে।
সিংহটি তখন মারা ছিল একবারেই দুঃসাধ্য। সবাই নিশ্চিত ছিল যে, এই সিংহ মারতে গিয়ে হারকিউলিস নিজেই মারা পড়বে। হারকিউলিস সিংহটিকে মারার জন্য ওক গাছের কাঠ দিয়ে বিশাল বড় একটা লগুর তৈরি করেন। লগুরটি এতই ভারী ছিল যে, ২০ জন শক্তিশালী মানুষও লগুরটি তুলতে ব্যর্থ হয়। হেরাক্লেস লগুরটিকে নিয়ে একাই সিংহের গুহায় ঢুকেছিলেন। ঢোকার পর সিংহটি তাকে প্রথমে আক্রমণ করে কিন্তু পরক্ষণেই হারকিউলিস লগুরটি দ্বারা সিংহটিকে আঘাত করলে সিংহটি পরাস্ত হয়। লগুরের আঘাতে সিংহটি আহত ও ক্লান্ত হয়ে পড়লে হেরাক্লেস সিংহটিকে গলা টিপে হত্যা করেন। এই দুঃসাহসিক ঘটনার পর হারকিউলিসের নামে বিভিন্ন স্থানে বীরত্ব ছড়িয়ে পড়ে।
হেরাক্লেসের
বীরত্ব সম্পর্কে আরও একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। আর সেটি হচ্ছে হাইড্রা বধ কাহিনী। হাইড্রা ছিল লারনিয়া নামের এক
জলাশয়ের দানব। যে দানব মানুষের নানান অনিষ্ট করত। অনেক পশুপাখির
পাল সে খেয়ে ফেলত চোখের নিমিষেই। মূলত
এই হাইড্রা ছিল বিরাটকায় একটি সাপ,
যার
মাথা ছিল
৯টি। এই নয়টি মাথার মধ্যে ৮টি
মাথা ছিল মরণশীল, একটি ছিল
অমর। তার শরীর ছিল চকচকে আঁশে পরিপূর্ণ। মানুষকে অনিষ্টের হাত হতে রক্ষা করার জন্য
হেরাক্লেস একদিন হাইড্রার সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। যুদ্ধ করার সময় হারকিউলিস দেখতে পান হাইড্রার একটা মাথা কেটে
ফেললে ওই জায়গা থেকে নতুন দুটি
মাথা
জন্মাচ্ছে।
পরিশেষে উপায় না দেখে হেরাক্লেস লোলাউসের সহযোগিতায় সাপের মাথা কেটে সেই কাটা অংশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। ফলে আর কোনও নতুন মাথা জন্মাতে পারে নি। এভাবে আটটি মাথা ধ্বংস করার পর হেরাক্লেস হাইড্রাকে পাতালে গেঁথে ফেলেন এবং হাইড্রার শরীরের ভয়ঙ্কর বিষ নিজের তীরে মাখিয়ে হাইড্রাকে হত্যা করেন।
পরিশেষে উপায় না দেখে হেরাক্লেস লোলাউসের সহযোগিতায় সাপের মাথা কেটে সেই কাটা অংশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। ফলে আর কোনও নতুন মাথা জন্মাতে পারে নি। এভাবে আটটি মাথা ধ্বংস করার পর হেরাক্লেস হাইড্রাকে পাতালে গেঁথে ফেলেন এবং হাইড্রার শরীরের ভয়ঙ্কর বিষ নিজের তীরে মাখিয়ে হাইড্রাকে হত্যা করেন।
হারকিউলিসের আরও একটি বীরত্বের কাহিনী
হচ্ছে, সম্রাট
আভগিয়াসের পাঁচ হাজার ষাঁড় ছিল। এত
প্রচুর পরিমাণে ষাঁড় থাকার কারণে তার আস্তাবল ৩০ বছর ধরে নোংরা
ছিল। আভগিয়াস হারকিউলিসের বীরত্বের
কথা শুনে তাকে একদিনেই তার আস্তাবলটি পরিষ্কারের দায়িত্ব দেন। যেদিন তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সেদিন আবার আভগিয়াসের সঙ্গে তার
অতিথিদের ভোজ চলছিল। হারকিউলিস
আস্তাবল পরিষ্কার করার জন্য আলফিয়াস ও পেনিয়াস নদী দুটিতে বাঁধ দিয়ে পানির গতিবেগ রুদ্ধ করেন। এরপর ওই পানিকে আস্তাবলের ওপর
দিয়ে চালনা করে একদিনেই
আস্তাবল পরিষ্কার করে ফেলেন।
হারকিউলিসের পরবর্তী বীরত্বের কাহিনীটি
হচ্ছে সোনার আপেল সম্পর্কে। গ্রিস থেকে অনেক দূরে হেস্পিরিডিস নামক এক স্থানে
ছিল সোনার
আপেল। সেই সোনার আপেলের খোঁজে হারকিউলিস
হেম্পিরিডিসের পথে যাত্রা করেন। হেরাক্লেস
লিবিয়া, মিশর, ইথিওপিয়া, এশিয়া অতিক্রম করে এটলাস পর্বতে পৌঁছানোর পর যাত্রা পথে প্রমিথিউসের সঙ্গে দেখা হয়। প্রমিথিউস তাকে আরেক মহাবীর
আতলান্ত্যসের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এই বীরের নামানুসারেই
পরবর্তীতে আটলান্টিক মহাসাগরের নামকরণ করা হয়। হারকিউলিস প্রমিথিউসের
কথানুসারে আতলান্ত্যসকে সোনার আপেল পেড়ে আনার জন্য পাঠান।
হারকিউলিসের
বিভিন্ন অভিযান নিয়ে রয়েছে গল্পের পর গল্প। তিনি নানা স্থানে
গিয়েছিলেন
আর স্থাপন করেছিলেন আরও অনেক কীর্তি। ভয়ঙ্কর
দানব এন্টিউসের
বিরুদ্ধে, নদী-দেবতা
আকিলাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার
পাশাপাশি
ট্রয়ের যুদ্ধে এক কুমারীকে উদ্ধার করে তিনি মহিমান্বিত হন। এডমিটাসের মৃত স্ত্রী এলসেস্টিসকে মৃত্যু-দেবতার হাত থেকে
লড়াই করে ফিরিয়ে
আনেন হারকিউলিস। হারকিউলিসের ছিল প্রচণ্ড শক্তি। আর এই অস্বাভাবিক শক্তি থাকার কারণে
হারকিউলিস অনেককে অসাবধানতা বশত বা সামান্য কারণে হত্যা করেছিল। সে বাল্যকালে
রাগের মাথায় শিক্ষকের মাথায় বীণা দিয়ে প্রচণ্ড আঘাত করে শিক্ষককে হত্যা করেছিল।
হারকিউলিস
বিয়ে করেন ডিয়ানাইরাকে । সেন্টর নেসাস ডিয়ানাইরাকে
লাঞ্ছিত করতে চাইলে হারকিউলিস তাকে বিষাক্ত তীরের আঘাতে হত্যা করেন। নিহত হওয়ার আগে সেন্টর ডিয়ানাইরাকে তার
নিজের কিছু রক্ত দিয়ে বলেছিল, এই রক্তের জাদুবলে
হারকিউলিস তাকে ছাড়া অন্য কোনও নারীকে ভালবাসবে না। কিন্তু
এটা ছিল সেন্টর চালাকি। ডিয়ানাইরা
চক্রান্তে পড়ে ওই রক্ত হারকিউলিসের
পরিধেয় গাউনে মাখিয়ে দেন। জামাটি
পরিধানের সঙ্গে সঙ্গে হারকিউলিসকে
ভয়ঙ্কর ব্যথা গ্রাস করে। দেবতার
কাছাকাছি হওয়ায় মৃত্যু তাকে
গ্রাস
করবে না এই বিশ্বাসে হারকিউলিস একটি চিতা তৈরি করেন ও তার উপর বসে পড়েন। চিতায় আগুন জ্বলে উঠলে তাকে
স্বর্গে তুলে নেওয়া হয়।
হারকিউলিসের কাহিনী কাল্পনিক হলেও এটি সমগ্র বিশ্বে
ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে। অসীম সাহস বা দুঃসাহসিক বীরত্বের সাথে পরিচিত করতে হলে
সবার আগে হারকিউলিসের উদাহরণ দ্য়ো হয়। হারকিউলিসের বীরত্বের কাহিনী নিয়ে বিশ্বব্যাপী
লেখা হয়েছে অনেক গল্প ও বই। হলিউড, চীন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হারকিউলিসের
বীরত্ব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে সিনেমা ও টিভি সিরিয়াল। যেগুলো দর্শকদের কাছে দারুণ
জনপ্রিয়।
কোন মন্তব্য নেই