Header Ads

বিস্ময়কর বৈদ্যুতিক মানব পাজকিচ !

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। অনন্য সব মানবীয় গুনের সমাহার রয়েছে মানুষের মাঝে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হলেও অন্যান্য জীবের মতো মানুষেরও সব কিছুতেই রয়েছে তার একটা নির্দিষ্ট সীমারেখা। যার মধ্যে একটি হচ্ছে সহ্য সীমা। এই সীমা অতিক্রম করলে মানুষের শরীর ভেঙ্গে পড়ে। তবে আমাদের এই বিশ্বে এমনই একজন মানব আছেন যিনি বৈদ্যুতিক সহ্য সীমাকে অতিক্রম করতে পারেন।

শুধু তাই নয় তার নিজের রয়েছে এক অদ্ভুত ক্ষমতা। আর তার সেই ক্ষমতাটি হচ্ছে তিনি নিজ শরীরে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারেন। দেশে দেশে বিদ্যুৎ তৈরি করার জন্য যখন জ্বালানী ব্যবহার করা হয় সেখানে তিনি নিজ শরীর দ্বারাই বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারেন।

বিশেষ ক্ষমতাধর এই ব্যক্তির নাম স্লাভিসা পাজকিচ। ৫৪ বছর বয়সী বিস্ময়কর এই ব্যক্তির বাড়ি সার্বিয়াতে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে অত্যাশ্চর্য এক ক্ষমতার অধিকারী। সাধারণত মানুষের শরীরে বিদ্যুৎ প্রবাহ করলে মানুষ বৈদ্যুতিক শক লেগে মৃত্যু বরণ করে। কিন্তু পাজকিচ সেদিক থেকে অন্য মানুষ থেকে একেবারেই আলাদা। কারণ তিনি তার শরীরে বিনা বাধায় বা বিনা সমস্যায় উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ করতে পারেন। শুধু তাই নয়, পাজকিচ বিদ্যুৎ জমা করেও রাখতে পারেন তার শরীরে ব্যাটারির মতো। আর তাই পাজকিচকে তার এলাকার লোকেরা ব্যাটারি মানব বলে ডাকে। 

পাজকিচের বসবাস সার্বিয়ার পোজারেভাক শহরে। বিশ্বের অন্যান্য শহরের মতো এই শহরেও লোডশেডিং হয়। আর লোডশেডিং এ শহরটি অন্ধকারে ডুবে গেলেও পাজকিচের বাড়িতে ঝলমল করে আলো। প্রচণ্ড শীতে রাস্তাঘাট বরফে ঢেকে গেলে বন্ধুরা হানা দেন তার বাড়িতে তার শরীরের গরম আলিঙ্গন পেতে। স্লাভিসা পাজকিচের বাড়িতে আলোর অভাব হয় না কোনও দিনই। পাজকিচ তার বৈদ্যুতিক ক্ষমতা দেখিয়ে বিজ্ঞানের অনেক সূত্রকেও রহস্যে ফেলে দিয়েছেন।

১৭ বছর বয়সে তিনি কারখানায় কাজ করার সময় প্রথম নিজের দেহে এই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য টের পান। কারখানায় বৃষ্টিময় একদিন তার কয়েকজন সহকর্মী অলস ভাবে রেলিংয়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎ ছিটকে সরে আসেন সবাই। তারা অনুধাবন করেন ধাতব রেলিং বিদ্যুতায়িত হয়ে গেছেকৌতূহলবশত পরীক্ষা করতে সেখানে এগিয়ে যান পাজকিচ। বিস্ময়ের সঙ্গে তিনি লক্ষ্য করে, অন্যদের মতো কোনও অস্বাভাবিকত্ব তৈরি হচ্ছে না তার শরীরে এরপর কয়েকদিন পর পাজকিচ সত্যিটা যাচাই করার জন্য বৈদ্যুতিক প্লাগে হাত ঢুকিয়ে দেন। কিন্তু তিনি দেখতে পান তার শরীরে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। এর কিছু দিন পর তিনি আরও এক বিস্ময়কর বিষয় আবিষ্কার করেন। 

আর সেটি হচ্ছে, তিনি দেখেন তিনি তার শরীরে প্রয়োজনে অস্বাভাবিক তাপ তৈরি করতে পারছেন। সেখান থেকেই তার পথচলা, বন্ধু-বান্ধবের মাঝে এই খবর ছড়িয়ে পড়া থেকে শুরু করে আজ তিনি সবার কাছে এক বিস্ময়কর বৈদ্যুতিক মানব হিসেবে পরিচিত। দাঁতের কামড়ে তিনি জ্বালাতে পারেন বৈদ্যুতিক বাল্ব। পানি গরম করতে বা চা তৈরি করতে তার দরকার হয় না চুলার। কারণ পাজকিচের দুটি হাতই এজন্য যথেষ্ট।

পাজকিচ ইতোমধ্যে গিনেস বুক অব রেকর্ডসে দুটি ভিন্ন রেকর্ডের পাশে নাম লিখিয়েছেন। প্রথমবার নাম লেখান ১৯৮৩ সালে। সাধারণ মানুষ যেখানে ৫০ ভোল্ট বিদ্যুতেই কাবু হয়ে যায়, সেখানে তিনি ২০ হাজার ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবাহিত করেছিলেন তার শরীরের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এর প্রভাবে তার শরীরে সামান্যতম কোনও সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। এর ২০ বছর পর ২০০৩ সালে তিনি তার শরীরের তাপ দ্বারা এক কাপ পানিকে ৯৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উন্নীত করেন। যেটি করতে তার সময় লেগেছিল মাত্র মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। পাজকিচ নতুন কিছু রেকর্ড তৈরি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার পরবর্তী লক্ষ তিনি তার শরীরের তাপ দ্বারা এক মিলিয়ন ভোল্টের জেনারেটরকে চার্জ করবেন। আঙ্গুল থেকে লেজার রশ্মি ছোড়ার কায়দাও রপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি

বিজ্ঞানীরা অবশ্য পাজকিচের এই বিস্ময়কর ক্ষমতা দেখে অবাক। তারা বলেন একজন মানুষের পক্ষে কোনও ভাবেই এত বিদ্যুৎ শরীরে প্রবাহ করা সম্ভব নয়। তারা সত্যিই নিশ্চিত নন কিভাবে পাজকিচ তার দেহ বিদ্যুতের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। অনেকে বলেন, এটা পাজকিচের অনন্য একটি জিন বৈশিষ্ঠ। এছাড়া বিজ্ঞানীরা পাজকিচকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, পাজকিচের দেহে কোনও ঘর্মগ্রন্থি নেই। তাই বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন দেহ নয় বরং ত্বকই পাজকিচের বিদ্যুৎ প্রবাহের কাজ করে। অপূর্ব এই ক্ষমতার প্রদর্শনীই এখন পাজকিচের পেশা।


বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তিনি তার এই আশ্চর্য শক্তি প্রদর্শন করেন। তার এই অসম্ভব কার্যক্রম দেখে হতভম্ব হয়ে উঠেন উপস্থিত মানুষেরা। পাজকেচ বলেন উপস্থিত মানুষেরা আমাকে দেখে আনন্দ পায় তবে তারা আমার সাথে হ্যান্ডশেক করতে ভয় পায়'। জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ডিসকভারির দৃষ্টিতে পাজকিচ একজন প্রকৃত ‘Super Human’

৫টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.