Header Ads

ধ্বংসপ্রাপ্ত ভারতের প্রাচীন নগরী !

বিশ্ব জগতের সূচনা হওয়ার পর থেকে মানুষ অনেকটা সময় অসভ্য ও বর্বর সময় পার করেছে। এরপর একটা সময়ে পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটে সভ্যতার। মেসোপটেমিয়া থেকে শুরু হয় এই সভ্যতার পথ চলা। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান ও এলাকা ভেদে ছড়িয়ে পড়ে এই সভ্যতা। আর সভ্যতার হাত ধরে সেসকল স্থানে গড়ে উঠেছিল নগরী। সুমেরীয়, হিব্রু, পারস্য, মিশরীয়, কোরীয়, চীনা সহ বিভিন্ন সভ্যতার সূচনা ঘটেছে আমাদের এই পৃথিবীতে। সভ্যতার চারণভূমি আমাদের এই উপমহাদেশ

বিশ্বে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল সাধারণত নদী ও সমুদ্রকে কেন্দ্র করে। আমাদের এই উপমহাদেশও নদী বিধৌত, সেজন্য অনুকূল আবহাওয়া আর নদী-বিধৌত পলিমাটির কারণে কয়েক হাজার বছর আগে মানুষ এখানে গড়ে তুলেছিল বসতিগড়ে তুলেছিল সমৃদ্ধ নগরীশিক্ষা আর সংস্কৃতিতে উপমহাদেশের মানুষেরা প্রথম থেকেই ছিল সমৃদ্ধকিন্তু বছরের পর বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিংবা বাসস্থানের পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময় ধ্বংস হয়ে গেছে উপমহাদেশের অনেক সমৃদ্ধ নগরী আর জনপদযুগ যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর ঝড়, বৃষ্টি, ভূমিকম্প, জলোচ্ছাস সহ নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগে সেগুলো তলিয়ে গিয়েছিল মাটির নিচে। 

কিন্তু আধুনিককালে প্রত্নতাত্ত্বিকদের খোঁড়াখুঁড়ির ফলে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে অনেক প্রাচীন নগরী এবং জনপদের ধ্বংসাবশেষবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এরকম উদ্ধার করা হয়েছে অনেক ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন নগরী। সে ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ভারতে আবিষ্কৃত হয়েছে তেমনি সমৃদ্ধশালী এক প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ
উড়িষ্যার রাজধানী ভুবনেশ্বরের কাছাকাছি প্রত্নতত্ত্ববিদরা খুঁজে পেয়েছেন প্রাচীন সেই নগরীর নিদর্শন ধারণা করা হচ্ছে, এ নগরটি আড়াই হাজার বছর আগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলগবেষকদের মতে, এটি ছিল অতি উন্নত একটি শহর। 

খননের ফলে এখানে পাওয়া গেছে ১৮টি পাথরের খুঁটি, নকশা করা পোড়ামাটির চুড়ি, বালা, অন্যান্য গহনা, আংটি, কানের দুল, গলার হার, বাহুবন্ধসহ অনেক নিদর্শন সেখানের মানুষদের ব্যবহৃত জিনিসগুলো পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে তারা একটি সমৃদ্ধ জনপদের বাসিন্দা ছিল।

১৯৪৮ সালে প্রফেসর বি বি লাল সর্বপ্রথম এখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করেনএখানকার স্থাপত্যশিল্প এবং তার নকশা গবেষণা করে তিনি জানান, সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে খ্রিস্ট জন্মের পর চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত শহরটি স্থায়ী ছিলকিন্তু পুনার ডিকান কলেজের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আর কে মোহান্তি এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মনিকা স্মিথ বি বি লালের মতের বিরোধিতা করে বলেছেন, সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম অব্দ থেকে খ্রিস্ট জন্মের পর চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত শহরটির অস্তিত্ব ছিলনতুন আবিষ্কৃত এ নগরীর ৪.৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চালানো হয়েছে খনন কাজ। 

তবে গবেষকদের ধারণা, এর বাইরেও অনেক নিদর্শন থাকতে পারেঅস্তিত্বহীন বাড়িঘর ও নগরের যাবতীয় বিষয়ের ওপর গবেষণা করে তারা ধারণা করছেন, এখানে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ বাস করত২০০৫ সাল থেকে চালানো এ খনন কাজ বর্তমানে সমাপ্ত করা হয়েছে প্রত্নতত্ত্ববিদরা ধারনা করছেন নতুন এই নগরী আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে ভারত তথা উপমহাদেশের অনেক অজানা তথ্য জানা যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.