Header Ads

বিস্ময়কর খাদ্য ভীতিতে মারা যাওয়া এক মহিলা !

মানুষ মাত্রই মরণশীল। প্রত্যেক মানুষকেই তার নির্দিষ্ট জীবনকাল অতিবাহিত করার পর মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়। তবে সবার মৃত্যু একইভাবে হয় না। কেউ অসুখ-বিসুখ আবার কেউবা দুর্ঘটনায় আকস্মিক মৃত্যুবরণ করে। তবে সাধারণভাবে মানুষ বৃদ্ধ হয়ে বার্ধক্য জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে। 

তবে এমন কখনও কি শুনছেন যে, মানুষ না খেতে পেরে মারা গেছে? অবশ্যই শুনেছেন, কারণ ক্ষুধা, দারিদ্র ও দুর্ভিক্ষে প্রতিবছর বিশ্বে হাজার হাজার লোক মারা যাচ্ছে। তবে এমন কখনও কি  শুনেছেন যে, বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী থাকা সত্ত্বেও এবং নিজে খাবার খাওয়ার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কেউ না খেয়ে মারা গেছে। এমন ঘটনা হয়তো আপনার কাছে নতুন মনে হচ্ছে! নতুন মনে হওয়ারই কথা, কারণ এমন ঘটনা সহজে ঘটে না

তবে এমনই ঘটনা ঘটেছে ক্যাটি সিলভা নামক এক মহিলার জীবনেমিস ক্যাটি সিলভার বাড়ি যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইয়ালিং এলাকায়। মিস ক্যাটির সমস্যা হচ্ছে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে খাদ্য ভীতিতে ভুগছিলেন। খাদ্য বা খাওয়ার প্রতি ছিল তার মারাত্মক ধরনের ভয়। যার ফলে দীর্ঘ ১৬ বছর খাদ্য ভীতিতে ভোগার পর তিনি মারা গিয়েছেন মাত্র ৩১ বছর বয়েসে। ২০১১ সালের ১২ জুলাই তারিখে মিস ক্যাটি দক্ষিণ লন্ডন ভিনসেন্ট স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মৃত্যুবরণ করেন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ক্যাটি সিলভার খাদ্য ভীতি রোগে ভুগছিলেন। তার খাদ্য গ্রহণের প্রতি ছিল মারাত্মক ভয়। তিনি কোনও কিছু খেতে ভয় পেতেন। 

যত সুস্বাদু খাবারিই হোক না কেন তার সামনে আনলে তিনি সেগুলো খেতেন না। তার বন্ধু-বান্ধবরা তাকে বিভিন্ন ভাবে খাওয়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতো। তিনি তার বাসা থেকে অন্য কোন বাসায়ও তেমন বেড়াতে যেতেন না, তারা যদি তাকে খেতে বলে সেই ভয়ে। তার সামনে খাওয়ার কথা বললে বা কোনও খাবারের কথা বললে তিনি মারাত্মক ভয় পেয়ে যেতেন ও অশস্তি বোধ করতেন। মোটকথা খাওয়া তার কাছে ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহতম কঠিন কাজ।

এই দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ না করার কারণে তার শরীরের রক্তবাহী শিরা, উপ-শিরাগুলো শুকিয়ে গিয়েছিল পরিপাকতন্ত্র অকেজো হয়ে পড়েছিলরক্তবাহী শিরা-উপশিরা কাজ না করায় হৃৎপিণ্ডের আকার অর্ধেক হয়ে পড়েছিলআর সবশেষে তাকে পৃথিবী ছেড়ে তাকে চলে যেতে হয়েছে। ডাক্তার ও মনোরোগ চিকিৎসকরা জানান, ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নারী-পুরুষ এই ধরনের রোগ বা খাদ্য ভীতিতে ভোগেনতাদের ৫ শতাংশ অপুষ্টি জনিত রোগে মারা যান। 

কিশোরী ও যুবতীদের মধ্যে এ মানসিক রোগের হার বেশিনারীদের ২০০ জনে ১ জন এবং পুরুষদের ২ হাজারে ১ জন এ রোগে আক্রান্ত হন আর এই রোগে প্রবলভাবে আক্রান্ত হলে যে কী শেষ পরিণতি হয় সেটা মিস ক্যাটির পরিণতি দ্বারা সহজেই বোঝা যায়।

1 টি মন্তব্য:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.