Header Ads

ভয়াবহ জ্বলন্ত জাহান্নামের দরজা !

বিচিত্র আমাদের এই পৃথিবীতে এমন অনেক বিষয় বা স্থান আছে যেগুলো সবার মনে কৌতূহলের উদ্রেক করে। ভাবিয়ে তোলে মানুষের অবচেতন মনকে। কেন এমন হলো, কেনই বা এমন হচ্ছে, এমন হবার কারণ কি এই সকল প্রশ্নের উদ্রেক করে মানুষের মনে। আর সে বিষয়টি যদি মানুষের কোনও কর্মকাণ্ডের দ্বারা সৃষ্ট হয় তবে সেটি আরও মানুষের মনকে ভাবিয়ে তোলে।

আর এমনই একটি কৌতুহলপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জ্বলন্ত জাহান্নামের দরজা। জাহান্নামের দরজার কথা শুনে হয়তো আপনারা ভাবছেন আমি সত্যি সত্যি আল্লাহর তৈরিকৃত দোযখের কথা বলছি। কিন্তু তা নয়, তাহলে আসুন আমরা জানি প্রকৃত বিষয়টা কি।

তুর্কিমেনিস্তান দেশের কারাকুমের মধ্যস্থলে দারবাজা নামক গ্রামে আছে একটি জ্বলন্ত গুহা বা সুড়ঙ্গ। এটা আসগাবাদ থেকে ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। দারবাজা নামক এই স্থানটি পূর্ব থেকে ছিল প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ একটি এলাকা। ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম সোভিয়েত ভূতত্ত্ববিদগন আবিষ্কার করেন যে, এই স্থানটি গ্যাসে পরিপূর্ণ। তারা প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধানে যখন এখানে মাটি খুড়া শুরু করেন তখন হঠাৎ মাটির ধস নেমে ৭০ মিটার বা ২৩০ ফুট বৃহৎ গর্তের সৃষ্টি হয়। এই গর্তটা এতই বৃহৎ ও গভীর ছিল যে, সাথে সাথে সেখানে গর্ত খুড়ার সকল বড় বড়  মেশিন ও ভূতত্ত্ববিদ ও শ্রমিকদের সকল তাঁবু এই গর্তের গভীর খাদে হারিয়ে গিয়েছিল। 

এই গুহার সৃষ্টি হবার কারণে এই স্থান দিয়ে বাইরের এলাকায় বিষাক্ত মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দেয়। বিজ্ঞানীরা সাথে সাথে সেখানে তাদের কাজ বাতিল করেন এবং এই গ্যাস থেকে মানুষ ও পরিবেশকে কিভাবে বাঁচাবেন সেটা নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করেন। বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন এই স্থান থেকে এভাবে প্রতিনিয়ত মিথেন গ্যাস নির্গত হলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে এবং দ্রুত গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের বিস্তার ঘটবে। বিশিষ্ট জনেরা সবাই এই মর্মে একমত হন যে মানুষ ও পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে এখানের সকল গ্যাসকে দ্রুত নিঃশেষ করে ফেলতে হবে। 

তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা সেই গুহাতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। তাদের ধারনা ছিল আগুন জ্বালানোর ফলে অল্প কিছু দিন, মাস বা বছরের মধ্যে এখানের সব গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বিধি বাম! তাদের সেই চিন্তার প্রতিফল বাস্তবায়ন হয়নি। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার পর সেই আগুন ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে জ্বলছে। আর কত শত বছর এটি জ্বলবে তা কেউ বলতে পারে না।

২০১০ সালের এপ্রিল মাসে তুর্কিমিনিস্তানের সরকার প্রধান এই স্থানটি পরিদর্শন করেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এখানের আগুনের মাত্রাকে কমিয়ে গর্তটিকে বন্ধ করতে হবে এবং তারপর এখানে রক্ষিত বাকি গ্যাসগুলোকে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। অবশ্য সেটি বাস্তবায়ন দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বছরের পর বছর ধরে জ্বলছে এই আগুনের গুহা। কবে এখানের আগুন নিভবে কেউ জানেনা। আগুন জ্বলা এই গুহার পরিণামের জন্য বর্তমানে এটিকে জাহান্নামের দরজা’ ( The Door to Hell) বলা হয়ে থাকে। সমগ্র বিশ্বে এখন এটি সেই নামেই পরিচিত। 

1 টি মন্তব্য:

  1. সেই বিজ্ঞানীগুলো কারা? তাদের ধরে বাংলাদেশি পুলিশ দ্বারা পিটানো দরকার।

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.