ভারতীয় মহাবিদ্রোহের না জানা কথা
সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি ইংরেজ বেনিয়ারা
ভারতে আসেন সামান্য ব্যবসার অজুহাত নিয়ে। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে নানা
চক্রান্ত ও কূটকৌশলের মাধ্যমে তারা ভারতের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হাতে নিতে সক্ষম হয়। ১৭৫৭
সালে পলাশী যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার মাধ্যমে তারা এদেশে তাদের ক্ষমতা
ও আধিপত্যের জানান দিয়েছিলো আর ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে মীর কাশিমকে
পরাজিত করে সমগ্র ভারতকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল।
পলাশী যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হাতে পান তা কাজে লাগিয়ে সমগ্র ভারত বর্ষে শোষণ ও নির্যাতন চালাতে থাকে। বাংলার ¯^vaxb‡PZv জনগণ কখনও পরাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। তাই দীর্ঘ একশ বছরের অসন্তোষ অবসানের জন্য ১৮৫৭ সালে রাস্তায় নেমে আসে। ফলে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম কাহিনী মহাবিদ্রোহ, যাকে সিপাহী বিদ্রোহ বা ভারতীয় বিদ্রোহও বলা হয়ে থাকে।
পলাশী যুদ্ধের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হাতে পান তা কাজে লাগিয়ে সমগ্র ভারত বর্ষে শোষণ ও নির্যাতন চালাতে থাকে। বাংলার ¯^vaxb‡PZv জনগণ কখনও পরাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। তাই দীর্ঘ একশ বছরের অসন্তোষ অবসানের জন্য ১৮৫৭ সালে রাস্তায় নেমে আসে। ফলে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম কাহিনী মহাবিদ্রোহ, যাকে সিপাহী বিদ্রোহ বা ভারতীয় বিদ্রোহও বলা হয়ে থাকে।
১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের অন্যতম কারণ
ছিল ভারতীয় শাসকবর্গের তীব্র ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব। লর্ড ডালহৌসি তার ¯^Z¡ বিলোপ নীতি প্রয়োগ করে সাতারা, ঝাঁসি, নাগপুর, m¤^jcyi প্রভৃতি রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। ডালহৌসি অযোধ্যা দখল করে নবাবকে
কলকাতায় নির্বাসন দেন ফলে নবাবের অধীনে অনেক পরিবার সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। ব্রিটিশদের এই সকল কর্মকাণ্ড ভারতীয় নেতৃবৃন্দ ও জনগণকে চরমভাবে
অসন্তুষ্ট করেছিল।
ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে এদেশ ছিল কৃষি ও
শিল্পে সমৃদ্ধ। কিন্তু কোম্পানি শাসনে এদেশে শুরু হয় লাগামহীন শোষণের পালা। চিরস্থায়ী
বন্দোবস্তের ফলে ভারতীয় দরিদ্র কৃষককুলের উপর জমিদার ও রাজস্ব আদায়কারী শক্তির শোষণ
বৃদ্ধি পায়। কৃষক ও জনসাধারণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়। এই সকল কর্মকাণ্ড ভারতীয়দের
বিদ্রোহে বাধ্য করেছিল।
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের জন্য ধর্মীয় অসন্তোষ
দায়ী ছিল। ভারতে খ্রিষ্টান মিশনারিদের তৎপরতায় ভারতীয়দের মনে এ আশংকা জন্মায় যে, ইংরেজ শাসনে তারা ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হবে। খ্রিষ্টান মিশনারিদের প্রকাশ্য
ধর্মপ্রচার, হিন্দু-মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা, মন্দির ও মসজিদের জমির উপর কর
আরোপ জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। ১৯৫৭ সালে R.D. Mangales ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এক ভাষণে
বলেন ''খ্রিস্টধর্মের বিজয় পতাকা ভারতের
একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সগৌরবে উড্ডীন রাখার জন্য ভাগ্যবিধাতা হিন্দুস্থানের
বিস্তৃত সাম্রাজ্য ইংল্যান্ডের হাতে তুলে দিয়েছে''। তার এই ধরনের বক্তব্য ভারতীয়দের বিদ্রোহে অনুপ্রাণিত করে
ছিল।
মহাবিদ্রোহের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল সামরিক
বৈষম্য। ব্রিটিশ সরকার ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৫০০ জন ভারতীয় সৈন্যের জন্য বার্ষিক ব্যয় করতো ৯৮
লক্ষ পাউন্ড এবং ৫১ হাজার ৩১৬ জন ইউরোপীয় সৈনিকদের জন্য ব্যয় করতো ৫৬ লক্ষ ৬০ হাজার
পাউন্ড। যা ছিল ভারতীয় সৈনিকদের জন্য চরম বৈষম্য।
তবে এই সকল কারণগুলো ছাড়াও মহাবিদ্রোহ
বা সিপাহী বিদ্রোহের জন্য দায়ী ছিল এমন একটি কারণ যা সকলের অজানা থেকে যায়। ব্রিটিশ
সরকারের কয়েকটি ধর্মীয় সংস্কার ও এনফিল্ড রাইফেলের ব্যবহার ছিল সিপাহী বিদ্রোহের
মূল কারণ। ব্রিটিশ সরকার ধর্মীয় সংস্কার হিসেবে তিলককাটা নিষিদ্ধ করে এবং সেই সাথে দাঁড়ি কামানো এবং পুরাতন পাগড়ি ব্যবহারে চাপ প্রয়োগ করে ভারতীয়
হিন্দু ও মুসলিম সৈনিকদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত হানে।
মহাবিদ্রোহে সিপাহীদের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল এনফিল্ড রাইফেলের ব্যবহার। তখন ব্রিটিশ সরকার এনফিল্ড নামক এক প্রকার রাইফেল এর ব্যবহার শুরু করে। যা ব্রিটেন থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়। এই রাইফেলের গুলির কার্তুজ পশুর চর্বি দ্বারা আবৃত থাকতো। এ চর্বি দাঁত দিয়ে কেটে কার্তুজ থেকে বন্দুকে গুলি ভরতে হতো। এই রাইফেল ব্যবহার শুরু হবার পর মুসলমান সৈনিকদের মাঝে গুজব ছড়ানো হয় যে কার্তুজে শুকরের চর্বি মাখানো আছে এবং হিন্দু সৈনিকদের মাঝে গুজব ছড়ানো হয় যে, গুলির কার্তুজে গরুর চর্বি মাখানো আছে।
মুসলমানদের কাছে শুকর হারাম ও হিন্দুদের গরু হত্যা নিষিদ্ধ হওয়ায় মুসলমান সৈনিক গন শুকরের চর্বি এবং হিন্দু সৈনিক গন গরুর চর্বি মুখে নেয়ার গুজবে চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং মুসলমান ও হিন্দু সকল সৈনিক গন একই সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে বিদ্রোহ শুরু করে। প্রথমে জনরোষ থেকে বিদ্রোহের সূচনা হলেও সেটি দানা বেধে উঠতে পারছিলো না কিন্তু পরে এই বিদ্রোহে সিপাহীরা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ গ্রহণ করলে সংঘটিত হয় ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহ।
মহাবিদ্রোহে সিপাহীদের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল এনফিল্ড রাইফেলের ব্যবহার। তখন ব্রিটিশ সরকার এনফিল্ড নামক এক প্রকার রাইফেল এর ব্যবহার শুরু করে। যা ব্রিটেন থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়। এই রাইফেলের গুলির কার্তুজ পশুর চর্বি দ্বারা আবৃত থাকতো। এ চর্বি দাঁত দিয়ে কেটে কার্তুজ থেকে বন্দুকে গুলি ভরতে হতো। এই রাইফেল ব্যবহার শুরু হবার পর মুসলমান সৈনিকদের মাঝে গুজব ছড়ানো হয় যে কার্তুজে শুকরের চর্বি মাখানো আছে এবং হিন্দু সৈনিকদের মাঝে গুজব ছড়ানো হয় যে, গুলির কার্তুজে গরুর চর্বি মাখানো আছে।
মুসলমানদের কাছে শুকর হারাম ও হিন্দুদের গরু হত্যা নিষিদ্ধ হওয়ায় মুসলমান সৈনিক গন শুকরের চর্বি এবং হিন্দু সৈনিক গন গরুর চর্বি মুখে নেয়ার গুজবে চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং মুসলমান ও হিন্দু সকল সৈনিক গন একই সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে বিদ্রোহ শুরু করে। প্রথমে জনরোষ থেকে বিদ্রোহের সূচনা হলেও সেটি দানা বেধে উঠতে পারছিলো না কিন্তু পরে এই বিদ্রোহে সিপাহীরা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ গ্রহণ করলে সংঘটিত হয় ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহ।
সিপাহি বিদ্রোহের ফলাফল ছিল ভারতীয় ইতিহাসের
জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে ১৮৫৮ সালে ভারত শাসন আইন প্রণয়ন হয় এবং ভারতে কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে। এই বিদ্রোহের
ফলে ইংল্যান্ডের মহারাণী এলিজাবেথ ঘোষণা পত্র প্রকাশ করেন যার মাধ্যমে ¯^Z¡we‡jvc নীতি বাতিল করা হয়, দেশীয় রাজন্যবর্গের দত্তকপুত্র
গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়, ভারতীয়দের ধর্মীয় ¯^vaxbZv দেয়া হয় এবং যোগ্যতা অনুযায়ী ভারতীয়দেরকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হয়।
মূলত সিপাহি
বিদ্রোহ ছিল দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। এই বিদ্রোহ
ভারতীয় ইতিহাসের একটি যুগান্তকারী ঘটনা কারণ এই বিদ্রোহ ছিল উপমহাদেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে
গৌরবময় প্রথম বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের সাহসে বলিয়ান হয়ে পরবর্তীকালে
ভারতীয়রা অন্যান্য বিদ্রোহ ও সংগ্রাম করতে সক্ষম হয়েছিল এবং সর্বোপরি পেরেছিল ব্রিটিশদের
ভারত থেকে পরিপূর্ণভাবে বিতাড়িত করতে।
কোন মন্তব্য নেই