Header Ads

সাগর তলের এক আশ্চর্য যাদুঘর - যা পানির নিচে অবস্থিত

আচ্ছা আপনি এই পর্যন্ত কত ধরনের যাদুঘর দেখেছেন? হয়তো দেখেছেন কয়েক ধরনের যাদুঘর। আচ্ছা পানির নিচে কোনও যাদুঘর দেখেছেন। কি অবাক হলেন? ভাবছেন পানির নিচে আবার যাদুঘর হয় কিভাবে! কেন হবে না? অবশ্যই হবে, কারণ পৃথিবীতে অসম্ভবের সংজ্ঞা যে পাল্টাতে শুরু করেছে। তাহলে ঢুকে পড়ুন সেই যাদুগরে, কি দেখছেন? মায়াবী নীল জলের জগত, যার মধ্যে দাড়িয়ে আছে ৪০০ মানুষ। হাতে হাত ধরে গোল হয়ে দাড়িয়ে আছে একদল নারী, কেউ বা শুয়ে আছে, কেউ আবার চালাচ্ছে সাইকেল।

কিছু বৃদ্ধ কালো মুখ করে বসে আছে আবার অনেক সন্তান সম্ভবা নারী দাড়িয়ে আছে নগ্ন ভাবে। টেবিলে রাখা টাইপ মেশিনে টাইপ করে চলেছে অনেকে, কেউ আছে টেবিলে শুয়ে আবার কেউ আছে দাড়িয়ে।

হ্যাঁ, এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে পানির নিচে আশ্চর্য একটি যাদুঘর। যাদুঘরটির নাম "কানকুন মেরিন পার্ক"। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১০ মিটার নিচে মায়াবী এক ভুবন তৈরি করা হয়েছে এই যাদুঘর দ্বারা। যাদুঘরে রয়েছে ৪০০ মানুষের প্রতিমূর্তি। এবং এই প্রতিমূর্তিগুলোকে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ভাবে। মূর্তিগুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে বসানো হয়েছে। যাতে মনে হয় পানির নিচে চলমান আলাদা একটি জগত। যাদুঘরের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সমুদ্রের নানা প্রজাতির মাছও কিন্তু তারা জানে না মানুষ গুলো আসল না নকল।

বিরল এই যাদুঘরটি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ভাস্কর জেসন দ্য ক্লেয়ার্স টেইলর। ৩৭ বছর বয়সী এই মানুষটি তার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তৈরি করেছেন এই প্রতিমূর্তির যাদুঘর। তার এই যাদুঘরটির তৈরি পিছনে একটি কারণও আছে। এখানে রয়েছে কানকুন ইসলা মুজেরেস ন্যাশনাল মেরিন পার্ক। বছরের সবসময় এই পার্কে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। ফলে সমুদ্র উপকূলে জলজ প্রাণীর আগমন ও জলজ প্রবালের অস্তিত্ব চরম সংকটের মুখে পতিত হয়েছিল। মোট কথা সমুদ্রের নিচের স্বাভাবিক পরিবেশ মেক্সিকোর পশ্চিম উপকূলে ছিল না বললেই চলে। 

আর তাই উপকূলের এই দুর্দিনে তার কাণ্ডারি হয়ে আবির্ভূত হন ভাস্কর জেসন দ্য ক্লেয়ার্স টেইলর। তিনি চিন্তা করেন, সমুদ্রপকূলে তার স্বাভাবিক অবস্থা আবার ফিরিয়ে দিতে হবে। তার চিন্তার কথা জানতে পেরে তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মেক্সিকোর দ্য মিউজিও সাব একুয়াটিকো ডি আর্ত নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে তারা শুরু করেন একটি প্রকল্প। যার নাম দেওয়া হয় "লাইফ কাস্টস"। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল ভাস্কর্যের মাধ্যমে নতুন করে গড়ে তোলা হবে উপকূলের প্রবাল প্রাচীরগুলো।

পানির নিচে অভিনব এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় কয়েক বছর আগে। কানকুন মেরিন পার্ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাদুঘরটি সাজানো হয় জেসনের তৈরিকৃত ভাস্কর্য দ্বারা। অন্যান্য ভাস্কর্যের চেয়ে একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হয়েছে এই ভাস্কর্যগুলো। কেননা, সমুদ্রের পানির উপরে কখন কতটা আলো পড়ছে তার ওপর নির্ভর করে পানির নিচে ভাস্কর্যের রং বদলে যায়। আর এর ধরনও পানির উপরের ভাস্কর্যের চেয়ে আলাদা। ব্রিটিশ শিল্পী জেসন টেইলর তার এই ভাস্কর্যমালার নাম দিয়েছেন 'দ্য সাইলেন্ট এভোলিউশন'

ভাস্কর্যগুলো তৈরির জন্য জেসন ব্যবহার করেছেন বিশেষ এক ধরনের সিমেন্ট। এই সিমেন্ট সাধারণ সিমেন্টের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশী শক্তিশালী। তাছাড়া সিমেন্টগুলো সাধারণত প্রবাল বান্ধব। এই সিমেন্ট দিয়ে ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে যাতে ভাস্কর্যগুলোতে খুব সহজেই প্রবাল দানা বাঁধতে পারে। কাজের প্রথম অবস্থায় প্রায় ২০০ ভাস্কর্য স্থাপনের কথা ভেবেছিলেন টেইলর। কিন্তু কিছুদিন পর তার এই ধারণা বদলে যায়। তিনি ভাস্কর্যের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করার চিন্তা করেন। শেষমেশ ৪০০টি ভাস্কর্যে সেজেছে কানকুন মেরিন পার্ক।

সমুদ্রের নিচে ভিন্ন আঙ্গিকে বসানো হয়েছে ভাস্কর্যগুলোকে।  বিশেষ এক ধরনের শক্ত ফাইবার গ্লাসের সাহায্যে মূর্তিগুলোকে পানির নিচে দাঁড় করানো হয়েছে। সেটিও তৈরি হয়েছে ভাস্কর্যে ব্যবহৃত উপাদানগুলো দিয়েই। সেগুলো বসানোর জন্য প্রথমে বিশেষ ক্ষমতাধর ড্রিল মেশিন দিয়ে সমুদ্রতল ফুটো করে নেওয়া হয়েছিল। তারপর একসঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ভাস্কর্যগুলোকে। ভাস্কর্যগুলোর আশপাশে এখন বাহারি রংয়ের মাছ জলজ প্রাণী ঘুরঘুর করতে দেখা যায়। আর ভাস্কর্যগুলো তৈরি করা হয়েছিল যে কারণে সেই লক্ষ্যও পূরণ হতে চলেছে। কারণ, প্রতিদিন মূর্তিগুলোকে ঘিরে দানা বাঁধছে প্রবাল!
 
সেখানে স্থাপন করা ভাস্কর্যগুলোর ওজন প্রায় ১২০ টনেরও বেশি। ভাস্কর্যগুলো পানিতে ভেঙ্গে পড়ার আশংকা নেই, এমনকি সেখানে অবাধে সাতারও কাটা যাবে। তবে ভাস্কর্যগুলোর বড় শত্রু  হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানকার আবহাওয়া। কারণ, প্রায়ই সেখানে হ্যারিকেন ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তাণ্ডব চলে! আর এই তাণ্ডবে যে কোনও মুহূর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে পারে স্বপ্নের এই জাদুঘরটি। 

তবে প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের আশা, ভাস্কর্যগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে টিকে থাকতে পারবে। যদি টিকে থাকতে পারে এই ভাস্কর্যগুলো তবেই টিকে থাকবে উপকূলের প্রবালগুলো।

৪টি মন্তব্য:

  1. hi all rakomari.blogspot.com blogger found your site via search engine but it was hard to find and I see you could have more visitors because there are not so many comments yet. I have found website which offer to dramatically increase traffic to your website http://xrumerservice.org they claim they managed to get close to 1000 visitors/day using their services you could also get lot more targeted traffic from search engines as you have now. I used their services and got significantly more visitors to my website. Hope this helps :) They offer backlink checking learn seo backlink service backlink building Take care. John

    উত্তরমুছুন
  2. hey there rakomari.blogspot.com owner found your site via yahoo but it was hard to find and I see you could have more visitors because there are not so many comments yet. I have found website which offer to dramatically increase traffic to your website http://xrumerservice.org they claim they managed to get close to 1000 visitors/day using their services you could also get lot more targeted traffic from search engines as you have now. I used their services and got significantly more visitors to my blog. Hope this helps :) They offer pr checker small business seo backlink service backlink service Take care. steve

    উত্তরমুছুন
  3. আপনার মন্তব্যের জন্য Banglabhai আপনাকে ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.