Header Ads

মহাবিশ্বের রহস্যাবৃত কিছু ঘটনা (পর্ব-৩)

আমাদের এই বিশ্ব বড়ই রহস্যময়। কালের আবর্তনে এই বিশ্ব ধরায় এমন কতগুলো ঘটনা ঘটেছে যা সবার কাছে আজও রহস্যময়। এই সকল ঘটনাগুলো সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীরাও পর্যন্ত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে কোনও উত্তর ুঁজে পান নি। ধারনা করা হয় এই ঘটনাগুলোর রহস্য মনুষ্য চিন্তা ধারার বাইরের। বিশ্বের এই সকল রহস্যাবৃত ঘটনাগুলো সম্পর্কে আমরা ধারাবাহিকভাবে জানার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে ১ম ও ২য় পর্বে আমরা কয়েকটি ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। আজ ৩য় পর্বে আমরা আরও কিছু বিষয়ে জানবো।

৭. (লেবনিকভের ভবিষ্যৎ বানী)


রাশিয়ার বিখ্যাত কবি ছিলেন ভেলিমির লেবনিকভ। অবশ্য এটি ছিল তার ছদ্ম নাম, তার আসল নাম ছিল ভিক্টর ভ্রাদিমিরোভিচ লেবনিকভ। তিনি জন্ম গ্রহণ করেন ১৮৮৫ সালে এবং মারা যান ১৯২২ সালে। লেবনিকভের জীবদ্দশায় সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯০৫ সালে যখন রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল তখন তিনি সেটি দারুণভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি বিপ্লব দেখে ঘোষণা করেছিলেন, প্রতি ১২ বছর পর পর রাশিয়া জাতীয় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। তার সেই কথাকে সবাই তামাশা বা পাগলের প্রলাপ ভেবে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল, কিন্তু বাস্তবতা ছিল খুবই রহস্যময়। 

কারণ কবির উক্তি অনুযায়ী কাকতালীয়ভাবে সেখান থেকে প্রতি ১২ বছর অন্তর অন্তর রাশিয়া পড়েছিল জাতীয় বিপর্যয়ে।  ১৯০৫ সালের রুশ বিপ্লবের পর ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় শুরু হ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব, তার ১২ বছর পর ১৯২৯ সালে দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ, ১৯৪১ সালে শুরু হয়েছিল দেশ মাতৃকার লড়াই, আর তার ১২ বছর পর ১৯৫৩ সালে হয়েছিল স্টালিনের মৃত্যু, ১৯৬৫ সালে দেখা দেয় রাশিয়ার জাতীয় সংকট, ১৯৭৭ সালে গৃহীত হ দেশের নতুন সংবিধান আর তার ১২ বছর পর ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর ভাঙার মধ্য দিয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নই। কবি লেবনিকভ রাশিয়ার পরিণতি সম্পর্কে এমন ধারনা কিভাবে পেয়েছিলেন সেটি একটি বড় রহস্য হয়ে আছে আজও!

৮. (রহস্যময় চাকতি)


১৯৪৭ সালের কথা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর রসওয়েল নামক স্থানে হঠাৎ আকাশ থেকে প্রচণ্ড বেগে গোল চাকতির মতো একটি বস্তু বিকট শব্দে আছড়ে পড়সেই স্থানের আশে পাশে অনেক মানুষ ঘটনাটি স্বচক্ষে অবলোকন করে। মানুষরা সবাই ছুটে গিয়েছিল সেই স্থানে কিন্তু প্রচণ্ড তাপ আর আগুনের ফুলকির মতো বের হওয়ার কারণে সেই যায়গার কাছে যেতে পারছিলো না কেউ। এই খবর চারিদিকে জানাজানি হওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিরাট মার্কিন সেনার দল এসে পৌঁছে সেখানে এবং পুরো জায়গাটি ঘিরে ফেলে সেনা সদস্যরা পরে সেই এলাকায় আর কোনও ব্যক্তিকে ঢুকতে দেয়নি। 

সেনা বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা শুধু সাংবাদিকদের উপস্থিত জানান যে, এখানে আকাশ থেকে বিরাট চাকতির মতো একটি বস্তু পড়েছে, সম্ভবত সেটি কোনও আকাশ যান, বাকিটা আপনাদের পরে জানানো হবে। পরের দিন বিশ্বব্যাপী খবরটি যখন জানাজানি হয় এবং সংবাদপত্রে খবরটি ফলাও করে প্রচার করা হয় তখন বিষয়টি নিয়ে সবার মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি করে। সবাই ভাবতে থাকে এটা কি তাহলে ভিন গ্রহ বাসীদের বাহন UFO ছিল!! এলিয়েনরা কি তাহলে সত্যিই পৃথিবীতে এসেছে? বিশ্বজুড়ে যখন এই রহস্য নিয়ে চিন্তা ভাবনা জোরালো হচ্ছে তখনই মার্কিন সরকার এই ঘটনাটিকে নিয়ে বিশ্ববাসীর সাথে নাটক শুরু করে। প্রথমে তারা বিশ্ববাসীকে জানায় এটা ছিল তাদের আর্মিদেরই নতুন একটি আকাশযান আবার পরে তারা বলে এটা ছিল খসে পড়া একটি উল্কাপিণ্ড! কিন্তু প্রকৃত যে ওই দিন সেখানে কি পতিত হয়েছিল সেটা আজও সবার কাছে এক রহস্য!

৯. (রহস্যময় সুনামি)


২৬ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখ এশিয়ার অধিবাসীদের কাছে একটি ভয়াবহ দিন। কারণ এই দিনে ভারত মহাসাগরের ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়ে এশিয়ার কয়েকটি দেশে। সুনামির তাণ্ডবে ভেসে যায় এবং ক্ষতি গ্রস্থ হয় ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, ভারত সহ ১৪টি দেশ। আকস্মিক এই সুনামির আঘাতে মৃত্যুবরণ করে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ। আর সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির দিক থেকে এটি ছিল হিসাবের বাইরে। প্রলয়কারী এই সুনামির কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় সাগরের তলদেশে সংঘটিত ৯.৩ মাত্রার ভূমিকম্পকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটতেই পারে যেকোনো সময় তবে মহা প্রলয়কারী এই সুনামি নিয়ে রয়েছে রহস্য। 

কারণ সুনামি শেষে মিশর সহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সংবাদপত্রে সুনামির আঘাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। সেই সব পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী সুনামির জন্য প্রকৃতি দায়ী ছিল না বরং দায়ী ছিল অস্ত্রবাজ কিছু রাষ্ট্র। তাদের মতে সুনামির আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান বা কোনও পারমানবিক শক্তিধর দেশ সেই সময় গোপনে পারমানবিক পরীক্ষা চালাচ্ছিল। কিন্তু পরীক্ষা চলাকালে দুর্ঘটনা বশত তারা ভারত মহাসাগরে সেই পারমানবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলে, ফলে সাগরে তৈরি হয় প্রায় ৯৮ ফুট বিশাল ঢেউ বা সুনামি। 

আর এই সুনামিই স্থলভাগে আছড়ে পড়ে ঘটায় ধ্বংসযজ্ঞ। সুনামির এই ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখে পরে দুর্ঘটনার এই কাহিনী চেপে যান অপরাধী সেই রাষ্ট্রটি। মিশর ও মধ্যপ্রাচ্যের এই পত্রিকাগুলোর সূত্র ধরে ২০০৪ সালের সুনামি নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্যের। সুনামি কি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে হয়েছিল নাকি হয়েছিল পারমানবিক বিস্ফোরণের কারণে? সেটা আজ এক বড় রহস্য।

এরকম আরও পড়ুন:

২টি মন্তব্য:

  1. সুনামি নিয়ে এমন হতে পারে সেটা আগে মাথায় আসেনি। তবে এই লেখা পড়ে আমি নিজেই এখন রহস্যে পড় গেছি।

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.