Header Ads

মহাবিশ্বের রহস্যাবৃত কিছু ঘটনা (পর্ব-২)

আমাদের এই মহাবিশ্ব অতি রহস্যময়। কালের আবর্তনে এখানে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যার কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে এমনই অনেক ঘটনাই ঘটেছে। যে ঘটনাগুলোর কারণ খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের চুল পড়ে যাওয়ার অবস্থা কিন্তু তারা রহস্য উদঘাটন করতে পারছেন না। আর এই ঘটনাগুলো বিজ্ঞানী সহ সবার কাছে রহস্যাবৃত ঘটনা হিসেবে পরিচিত। ১ম পর্বে আমরা এমনই কিছু রহস্যাবৃত ঘটনা সম্পর্কে জেনেছিলাম আজ আরও কিছু জানবো।

৪. (স্বপ্ন নাকি বাস্তবতা)

দুজন ইংরেজ মহিলা ১৯৫১ সালের ৪ আগস্ট ভোরবেলায় জার্মানির নর্মান্ডি শহরের ডিয়েফ বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। তারা রাতে সেখানে যখন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন ভোর ৪টার সময় বাইরে প্রচণ্ড গুলির শব্দে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। চারিদিকে তারা হাজার হাজার মানুষের আত্ম চিৎকার ও গোলা-গুলির শব্দ শুনতে পান। তারা নিজেরাও সেখানে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারলেন না। তাদের চার দিক ঘিরে চলতে থাকলো গুলি-বোমার প্রচণ্ড শব্দ, মানুষের চিৎকার, হাহাকার আর কান্না। এমনভাবে চললো ভোর ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। যুদ্ধ শেষে ভয়াবহ এক অবস্থা থেকে জীবন ফিরে পেল যেন ওই দুই মহিলা। তারা ভাবলো তাদের পুনর্জন্ম হয়েছে, কারণ এই যুদ্ধের মাঝে তারা যে বেচে থাকবেন এটা তারা ভাবতে পারেন নি।

সকালে তারা যখন বাইরে বের হন তখনই ঘটে আশ্চর্য ঘটনা। কারণ তারা বাইরে বেরিয়ে যুদ্ধ, গোলাগুলি বা কোনও প্রকার হত্যাযজ্ঞের চিহ্ন দেখতে পান নি। তারা তাদের পার্শ্ববর্তী অনেক মানুষের কাছে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করলো কিন্তু কেউ এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারলো না। সবাই বললো রাতে এমন কোনও কিছুই ঘটেনি। গতরাত ছিল অন্য রাতের মতোই স্বাভাবিক। পরিশেষে তারা ঘটনাটি খুলে বললো বিশেষজ্ঞদের কাছে। সেই দুই মহিলার বর্ণনার সাথে মিলে গিয়েছিল সামরিক বাহিনীর পুরাতন এক রেকর্ডের সঙ্গে। বিষয়টি ছিল অতি কাকতালীয়। ১৯৪২ সালের ১৯ আগস্ট ভোরবেলায় কানাডা ও ব্রিটিশ সেনাদল জার্মানির নর্মান্ডি বিমান বন্দর আক্রমণ করেছিল। সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছিল। আর সেই ঘটনাটিই ৯ বছর পর ফ্লাস ব্যাক হয়ে ফিরে এসেছিল এই দুই মহিলার ইন্দ্রিয়তে। ভোরের যুদ্ধ সম্পর্কে তারা আরও যা বর্ণনা দিয়েছিল তার সবই মিলে গিয়েছিল ওই ঘটনার সাথে।

এই ঘটনার রহস্য এখনও উদঘাটন করতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা। রাতে ওই দুই মহিলা কি নয় বছরে পূর্বে ফিরে গিয়েছিলেন? নাকি তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন? যদি তারা স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে দুজন একই সাথে একই স্বপ্ন দেখলেন কিভাবে? সকল রহস্যই এখনও রহস্য।

৫. (অজানা রহস্য মানব)

১৯৬৪ সালের ২৪ মের ঘটনাতখন জিম টেম্পপেল্টন ছিলেন উত্তর ইংল্যান্ডের একজন দমকলকর্মী। তিনি তার মেয়েকে নিয়ে সলওয়ে ফিরথের তৃণভূমিতে যান কিছু ছবি তোলার জন্য। সলওয়ে ফিরথ ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার একটি জলাভূমি। সেদিন তারা সেখানে ছবি তুলে ফিরেছিলেন স্বাভাবিক ভাবেই। সেদিন সেখানের আবহাওয়া ছিল স্বাভাবিক ও শান্ত। । যদিও তিনি ও তার স্ত্রী সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ লক্ষ্য করেছিলেন। বাতাসে ছিল অস্বাভাবিকতা। ঠিক যেমন ঝড়ের আগমুহূর্ত। কিন্তু আকাশ ছিল মেঘমুক্ত পরিষ্কার। এমনকি কাছের গরুগুলোকেও মনে হচ্ছিল দুর্বল 

কিছুদিন পর ছবি প্রসেস করে সংগ্রহ করার সময় স্টুডিও মালিক বলেছিল, টেম্পপেল্টনের মেয়েকে রানী এলিজাবেথের হাতে ফুল ধরা অবস্থায় একটি সুন্দর ছবি এসেছিল। কিন্তু এক বেরসিক লোক পেছন দিক থেকে এসে ছবিটি নষ্ট করে দিয়েছে। জিম টেম্পপেল্টন বিস্মিত হয়েছিলেন কারণ, ছবি তোলার সময় তাদের ধারে কাছে তিনি কাউকে দেখেননি। কিন্তু তিনি যখন ছবি দেখেন তখন আরও বেশী অবাক এবং হতভম্ব হয়ে যান। ছবিতে দেখা যায় একটি রুপালি সাদা জামা ঠিক নভোচারীদের স্পেস সুট পরিহিত এক লোক মেয়েটির মাথার পেছনে ভূমির সঙ্গে কোণ তৈরি করে বাতাসে ভেসে আছে। ঘটনাটি পুলিশের কাছে জানানো হয়। বিখ্যাত ছবির ফিল্ম প্রস্তুতকারী কোডাক কোম্পানি ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যর্থ হয়। তারা ঘোষণা দেয় এ রহস্যের সমাধান কারীকে তারা আজীবন ফ্রি ফিল্ম সরবরাহ করবে। এর কয়েক সপ্তাহ পর জিম টেম্পপেল্টনের বাসায় রহস্যময় দুই ব্যক্তি আসে। 

তারা জাগুয়ার গাড়িতে আসেন এবং কালো সুট পরা ছিল। তারা একজন আরেকজনকে সংখ্যা দিয়ে সম্বোধন করছিল। তারা জিম টেম্পপেল্টনকে সেই ছবি তোলার  জায়গায় আবার নিয়ে যায়। সেখানে তারা সেদিনের আবহাওয়া-পাখিদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করল। কিন্তু কিছু রহস্য উদ্ধার হলো না। ২০০৮ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৮৭ বছরের বৃদ্ধ জিম টেম্পপেল্টন বলেন, এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছিল। ১৯৬০ সালের ১৫ জুলাই দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার মারালিঙ্গা গ্রামের কাছে পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার সময় একই রকম রুপালি সাদা জামা ওয়ালা লোক দেখা গিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী এখন রহস্য কে এই রহস্য মানব?

৬. (ভুতুড়ে কয়েন বৃষ্টি)

ইংল্যান্ডের মেরি চার্চ সংলগ্ন কবর স্থানের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন সোফিয়া নামের এক মহিলা ও তার স্বামী ডেভিড। তারা যখন ওই স্থানটি হেটে অতিক্রম করছিলেন তখন অদৃশ্য থেকে কয়েকটি কয়েন তাদের বৃষ্টির মতো তাদের চার পাশে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েনগুলো তারা কুড়িয়ে হাতে নিয়ে দেখলেন সেগুলো যথেষ্ট গরম। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় কয়েনগুলো ১৯০২ ও ১৯০৩ সালের। 

ওই একই স্থানে আরও কয়েক ব্যক্তির গায়ে গরম কয়েন বৃষ্টি হয়েছিল। কোথা থেকে আসে এই কয়েন বৃষ্টি সেটি উদ্ধার করার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা, কিন্তু তারা ব্যর্থ হন। পরিশেষে এ বিষয়টি সবার কাছে ভুতুড়ে কয়েন বৃষ্টি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর এই কয়েন বৃষ্টির ঘটনাটি আজও সবার কাছে রহস্য, কোথা থেকে এসেছিল কয়েনগুলো?

এরকম আরও পড়ুন:

৫টি মন্তব্য:

  1. অসাধারণ একটি লেখা, অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ সুমন ভাইকে।

    উত্তরমুছুন
  2. অসাধারন পোষ্ট ।
    প্রায় 20 পড়েছি তবুও পড়তে ইচ্ছা হয়।

    উত্তরমুছুন
  3. ধন্যবাদ MD. Taleb আপনাকে। পোস্ট ভাল লাগলে তার মন্তব্য করলে সেটি লেখকের লেখার উৎসাহ তৈরি হয়। মন্তব্যের জন্য আপনাকে আবার ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন
  4. আপনাকে ধন্যবাদ, সুমন ভাই! অনেক জ্ঞান পাইলাম...

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.