Header Ads

বিস্ময়কর ১৫০০ বছরের সাহাবী গাছ!

এই বিশ্ব জাহানের একমাত্র মালিক আল্লাহ, যিনি এক ও অদ্বিতীয়। তিনি তার সার্বভৌমত্বের ঘোষণা দেয়ার জন্য যুগে যুগে অনেক নবী-রাসূল বা তার প্রতিনিধি প্রেরণ করেছেন এই পৃথিবীতে। যারা এই জগতে আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করেছে। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা তার অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে গিয়ে শুধু তার প্রতিনিধিদের প্রচারের উপর বসে থাকেননি বরং বিস্ময়কর ও অবিশ্বাস্য সব উপকরণ দিয়ে তিনি তার একক শক্তি ও ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন।আর তেমনই একটি প্রমাণ হচ্ছে সাহাবী গাছ। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় The Blessed Tree.

সাহাবী গাছ এমনই একটি গাছ যে গাছটি অবিশ্বাস্য ভাবে শত বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বেষ্টিত মরুভূমিতে গত ১৫০০ বছর ধরে একাই দাড়িয়ে আছে। মরুভূমির রুক্ষ্য পরিবেশের কারণে জন্ম থেকেই এই গাছটি ছিল পাতাহীন শুকনো কিন্তু একসময় আল্লাহর হুকুমে গাছটি সবুজ পাতায় ভরে উঠে এবং আজ পর্যন্ত গাছটি সবুজ শ্যামল অবস্থায় আছে। অবিশ্বাস্য এই গাছটি জর্ডানের মরুভূমির অভ্যন্তরে সাফাঈ নামক স্থানে অবস্থিত।  জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ সর্বপ্রথম এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দেন।

৫৮২ খ্রিস্টাব্দে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স তখন ১২ বছর। মোহাম্মদ (সাঃ) তার চাচা আবু তালিবের সাথে বাণিজ্য উপলক্ষে তৎকালীন শাম বা সিরিয়ার উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে যাত্রা করেন।

তাদের পরিভ্রমণের পথে তারা সিরিয়ার অদূরে জর্ডানে এসে উপস্থিত হন। জর্ডানের সেই এলাকাটি ছিল শত শত মাইল ব্যাপী বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকাময় এক মরুভূমি। মোহাম্মদ (সাঃ) এবং তার চাচা আবু তালিব মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময় ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রামের জায়গা খুঁজছিলেন। কিন্তু আশে পাশে তারা কোনও বসার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। চারদিকে যত দূর চোখ যায় তারা তাকিয়ে কোনও বৃক্ষরাজির সন্ধান পেলেন না। কিন্তু দূরে একটি মৃত প্রায় গাছ দেখতে পেলেন। উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝে গাছটি ছিল লতা-পাতাহীন শীর্ণ ও মৃত প্রায়। শেষে উপায় না পেয়ে তারা মরুভূমির উত্তাপে শীর্ণ পাতাহীন সেই গাছের তলায় বসেন। উল্লেখ্য, রাসূল মোহাম্মদ (সাঃ) যখন পথ চলতেন তখন আল্লাহর নির্দেশে মেঘমালা তাকে ছায়া দিত এবং বৃক্ষরাজি তার দিকে হেলে পড়ে ছায়া দিত।

মোহাম্মদ (সাঃ) তার চাচাকে নিয়ে যখন গাছের তলায় বসেছিলেন তখন তাদের ছায়া প্রদানের জন্য আল্লাহর নির্দেশে মৃতপ্রায় গাছটি সজীব হয়ে উঠে এবং গাছটির সমস্ত ডাল-পালা সবুজ পাতায় ভরে উঠে। আর সেই গাছটিই বর্তমানে সাহাবী গাছ নামে পরিচিত।

দূরে দাড়িয়ে জারজিস ওরফে বুহাইরা নামের একজন খ্রিষ্টান পাদ্রি সবকিছু
দেখছিলেন। আবু তালিব মোহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে পাদ্রীর নিকটবর্তী হলে তিনি বলেনআমি কোনও দিন এই গাছের নিচে কাউকে বসতে দেখিনি এবং এই গাছটিও ছিল পাতাহীন কিন্তু আজ গাছটি পাতায় পরিপূর্ণ। এই ছেলেটির নাম কি? চাচা আবু তালিব উত্তর দিলেন মোহাম্মদ! পাদ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন, বাবার নাম কি? আব্দুল্লাহ!, মাতার নাম? আমিনা!

বালক মোহাম্মাদ (সাঃ) কে দেখে এবং তার পরিচয় শুনে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পাদ্রীর চিনতে আর বাকী রইলো না যে এই সে বহু প্রতীক্ষিত শেষ নবী মোহাম্মদ। পাদ্রী চাচা আবু তালিবকে ডেকে বললেন তোমার সাথে এই বালকটি সারা জগতের সর্দার, সারা বিশ্বের নেতা এবং সেই হবে এই জগতের শেষ নবী। আমি তার সম্পর্কে বাইবেলে পড়েছি এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি এই বালকটিই শেষ নবী।
 
সাহাবী গাছ সেই ১৫০০ বছর পূর্ব হতে আজ পর্যন্ত সেইভাবেই জর্ডানের মরুভূমিতে দাড়িয়ে আছে। আজও গাছটি সবুজ লতা-পাতায় ভরা এবং সতেজ ও সবুজ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এই গাছটি যেখানে অবস্থিত তেমন মরূদ্যানে কোনও গাছ বেচে থাকা সম্ভব নয়  এবং এই গাছটির আশে-পাশে কয়েক শত কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোনও গাছ নেই। গাছটির চারিধারে দিগন্ত জোড়া শুধুই মরুভূমি আর মরুভূমি। উত্তপ্ত বালুকাময় মরুভূমির মাঝে গাছটি একাই দাড়িয়ে থেকে আল্লাহর অসীম ক্ষমতার সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং সেই সাথে প্রিয় রাসূল মোহাম্মদ (সাঃ) এর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রেখেছে। যা অবিশ্বাসীদের জন্য উৎকৃষ্ট নিদর্শন।

৪টি মন্তব্য:

  1. সুবহানাল্লাহ, সকল ক্ষমতা এক আল্লাহর। ধন্যবাদ লেখার জন্য।

    উত্তরমুছুন
  2. Allahu akber. Arokom sundor post sai din shomporke janar jonno.
    Lekhok vai k janai donnobad

    উত্তরমুছুন
  3. ধন্যবাদ জনাব তালেব এবং আমানকে আপনাদের সুন্দর মতামতের জন্য।

    উত্তরমুছুন
  4. সুন্দর সাইট। বেশ ভালো লাগল।

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.