Header Ads

নীল নদের নিকট ওমর (রাঃ) এর চিঠি ..

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার প্রেরিত পুরুষ নবী-রাসূলদের অনেক মোজেজা দান করেছিলেনতারা আল্লাহর রহমতে অনেক অসম্ভব কাজকে সম্ভব করতে পারতেন তাদের মোজেজা শক্তির দ্বারাএছাড়াও আল্লাহ তায়ালা তার অনেক নেক বান্দার দ্বারা অনেক আশ্চর্য শক্তি প্রদর্শন করিয়েছেনতিনি তার নেক বান্দার দোয়াকে কবুল করেছেন চুম্বকের মতোএমন অনেক ঘটনা হয়তো আমরা অনেকেই জানিআমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় তেমনই একটি সত্য ঘটনা

মিশরকে বলা হয় নীল নদের দানএই নীল নদের তীর ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে আজকের আধুনিক মিশর এবং মুসলিম সভ্যতাআজকে আমরা বছরের বারটি মাসেই নীল নদে পরিষ্কার ঝকঝকে পানি দেখতে পায়, কিন্তু শান্ত নিবিড় নীল নদ এক সময় এমন ছিল নাএকসময় নীল নদে বছরের সব সময় পানি থাকতো না বরং বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পানি থাকতো আবার নির্দিষ্ট সময়ে শুকিয়ে যেততাহলে এখন প্রশ্ন, নীল নদে পানি এখন বার মাসই থাকে কেন? এই নদীতে কি তাহলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে?

হিজরি ২০ সনে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর শাসনামলে বিখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর নেতৃত্বে সর্ব প্রথম মুসলমানরা মিশর বিজয় করেনমিশরে তখন চলছিল প্রবল খরাকারণ নিয়ম অনুযায়ী সেই সময়টি ছিল নীল নদের পানি শূন্য হয়ে পড়ার সময়পানি শূন্য নীল নদ দেখে সেনাপতি আমর ইবনুল আস (রাঃ) সেখানকার অধিবাসীদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন নীল নদের এমন অবস্থা কেন? তারা প্রতি উত্তরে বলেছিল হে আমীর ! নীল নদে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ম অনুসারে পানি প্রবাহিত হয় এবং বাকি সময় নীল নদ পানি শূন্য থাকে, তবে নদীকে যুবতী কন্যা উৎসর্গ করলে নদী আবার পানিতে ভরে উঠবে। 

তিনি বলেছিলেন সেটা কি? তারা উত্তর দিয়েছিল, নীল নদ এখন পানি শূন্য, কিন্তু এই মাসের ১৮ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা কোন এক কুমারী সুন্দরী যুবতীকে নির্বাচন করবঅতঃপর তার পিতা-মাতাকে রাজি করিয়ে তাকে সুন্দরতম অলংকারাদি ও উত্তম পোশাক পরিধান করিয়ে নীলনদে নিক্ষেপ করবএর ফলে দেবতার আশীর্বাদে নীল নদ আবার পানিতে ভরে উঠবেআমর ইবনুল আস (রাঃ) তাদের কথা শুনে বললেন, ইসলামে এই কাজের কোন অনুমোদন নেইকেননা ইসলাম প্রাচীন সব জাহেলী রীতি-নীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে

অতঃপর আমরের কথা মতো তারা সুন্দরী যুবতী উৎসর্গ করা থেকে বিরত থেকে পর পর তিন মাস পানির অপেক্ষায় বসে থাকলোকিন্তু নীলনদে কোনও প্রকার পানি বৃদ্ধি পেল নাউপায় না দেখে সেখানকার অধিবাসীরা দেশত্যাগের কথা চিন্তা করতে শুরু করলোনীল নদের এই অবস্থা দেখে আমর খলিফা ওমর (রাঃ) কে সব কিছু জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এবং সকল ঘটনা লিখে তিনি খলিফাকে  পত্র প্রেরণ করলেন

আমরের পত্র পেয়ে খলিফা ওমর (রাঃ) নীল নদকে উদ্দেশ্য করে একটি পত্র লিখে আমরের কাছে প্রেরণ করলেন এবং পত্রটি তিনি নীল নদের কাছে পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিলেন

নীল নদের প্রতি লেখা ওমর (রাঃ) এর পত্রটি তার নির্দেশ মোতাবেক আমর ইবনুল আস নীল নদের তীরে গিয়ে পত্রটি নদীতে নিক্ষেপ করেনপরদিন শনিবার সকালে মিশর বাসী অতি আশ্চর্যের সাথে লক্ষ করলো, আল্লাহ তায়ালা এক রাত্রে নীলনদের পানিকে ১৬ গজ উচ্চতায় প্রবাহিত করে দিয়েছেনতারপর নীল নদ চকচকে ঝকঝকে পানিতে ভরে উঠেছিল এবং আজ পর্যন্ত এক মিনিটের জন্যও নীল নদের পানি আর শুকিয়ে যায়নি

খলিফা ওমর (রাঃ) নীল নদের কাছে লেখা তার পত্রে লিখেছিলেন:

من عبد الله عمر أمير المؤمنين إلى نيل مصر أما بعد: فان كنت تجري من قبلك ومن أمرك فلا تجر فلا حاجة لنا فيك وإن كان الله الواحد القهار هو الذي يجريك فنسأل الله أن يجريك فألقى عمرو البطاقة في النيل فجرى أفضل مما كان

আল্লাহর বান্দা আমীরুল মুমিনীন ওমর (রাঃ) এর পক্ষ হতে মিশরের নীল নদের প্রতি প্রেরিত এই পত্রঅতঃপর হে নীল নদ! তুমি যদি নিজের ক্ষমতা বলে ও নিজের পক্ষ হতে প্রবাহিত হয়ে থাক, তাহলে তুমি আজ হতে আর প্রবাহিত হয়ো নাতোমার কাছে আমাদের কোন প্রয়োজন নেইআর তুমি যদি মহা পরাক্রমশালী এক আল্লাহর হুকুমে প্রবাহিত হয়ে থাক, তাহলে আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন তোমাকে প্রবাহিত করেন

৩টি মন্তব্য:

  1. ধন্যবাদ, অনেক সুন্দর তথ্য জানলাম। চালিয়ে যান।

    উত্তরমুছুন
  2. সুন্দর গোছানো লিখা, শেয়ার কয়ার জন্য ধন্যবাদ।

    উত্তরমুছুন
  3. ধন্যবাদ শাহিন আনাম ও ফয়সাল শাহী আপনাদের দু'জনকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.